বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার উপায় -যেতে কত টাকা লাগে জানুন ২০২৫

প্রিয় পাঠক, বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার উপায় অর্থাৎ সেরা কিছু উপায় জানতে এবং ইতালি যেতে কত টাকা লাগে এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পেতে আজকের আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়ুন। এর পাশাপাশি 
বাংলাদেশ-থেকে-ইতালি-যাওয়ার-উপায়
আজকের আর্টিকেলে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। যেটা বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাত্রা আপনার জন্য অনেক সহজ করে তুলতে পারে। তাহলে চলুন আর বেশি কথা না বাড়ি বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। 

পোস্ট সূচিপত্রঃ বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার উপায়

বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার উপায়

কোন কাজে কিংবা বিশেষ প্রয়োজনে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার মূলত দুইটি উপায় রয়েছে। উপায় দুটি হচ্ছে বৈধ এবং অবৈধ। ঠিক তেমনি আমরা যদি বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে যেতে চাই এবং এর যাওয়ার উপায় জানতে চাই তাহলে বৈধ এবং অবৈধ দুই উপায়েই যেতে পারি। 

তবে আজকে আমরা আলোচনা করব কোন উপায় আমাদের জন্য সবচেয়ে সেরা হবে। কিন্তু আপনি অবৈধভাবে যেতে চাইলে কিভাবে যেতে পারবেন সেটাও জানাবো। চলুন নিচে জেনে নেওয়া যাক। 

বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার বৈধ এবং অবৈধ কিছু উপায়... 
  • শিক্ষা ভিসা নিয়ে যাওয়া
  • কাজের ভিসা নিয়ে যাওয়া
  • বিজনেস ভিসা নিয়ে যাওয়া
  • ভ্রমণের ভিসা নিয়ে যাওয়া
  • লিবিয়া হয়ে সাগর পথের মাধ্যমে ইতালি যাওয়া
  • বর্ডার লুকানোর মাধ্যমে ইতালি যাওয়া
শিক্ষা ভিসা নিয়ে যাওয়াঃ আপনি যদি উচ্চশিক্ষা লাভ করতে চান তাহলে শিক্ষা ভিসা নিয়ে ইতালিতে যেতে পারেন। এতে করে আপনি সেখানেই স্কলারশিপ পেতে পারেন পাশাপাশি আপনার টিউশন ফি কম লাগবে। আপনি যদি একবার সেখানে ভর্তি হতে পারেন তাহলে স্টুডেন্ট ভিসা পেয়ে যাবেন যেটা পরবর্তীতে আপনি কর্মী ভিসায় রূপান্তর করতে পারবেন। 

কাজের ভিসা নিয়ে যাওয়াঃ বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে কাজের জন্য যাওয়া এবং অধিক পরিমাণ উপার্জন করা। সেক্ষেত্রে কাজের ভিসা নিয়ে যাওয়া আপনার জন্য সেরা উপায় হতে পারে। তবে এই ক্ষেত্রে আরেকটি সুবিধা হচ্ছে, ইতালির কোন কোম্পানি যদি আপনাকে কাজের সুযোগ দেয় তাহলে আপনি স্পন্সরড ভিসা নিয়েও যেতে পারেন। 

বিজনেস ভিসা নিয়ে যাওয়াঃ আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যারা ব্যবসার কারণে বাংলাদেশ থেকে এ ফালি যেতে চায়।সেক্ষেত্রে বিজনেস ভিসা নিয়ে যাওয়া আপনার জন্য একটি অন্যতম উপায় হতে পারে। ইতালিতে আপনি যদি বিনিয়োগ করতে চান এবং কোন ব্যবসা যদি খোলেন তাহলে সেখানে দীর্ঘ সময় ধরে বসবাস করতে পারবেন। 

ভ্রমণের ভিসা নিয়ে যাওয়াঃ ভ্রমণের জন্যও বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়া সম্ভব। তার জন্য আপনাকে ইতালির টুরিস্ট ভিসা নিতে হবে। তবে এই ভিসার মাধ্যমে শুধু আপনি সেখানে গিয়ে ভ্রমণ করে আবার ঘুরে আসতে পারবেন কিন্তু সেখানে নির্দিষ্ট ভাবে থাকতে পারবেন না। নিচে আমরা জানতে পারবো এ সমস্ত ভিসা আবেদন কিভাবে করতে হয়। 

লিবিয়া হয়ে সাগর পথের মাধ্যমে ইতালি যাওয়াঃ আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে ইতালি অবৈধভাবে যেতে চান তাহলে লিবিয়া হয়ে সাগর পথের মাধ্যমে ইতালিতে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে এটি আপনার জন্য ভয়ংকর একটি পথ হতে পারে। কেননা বাংলাদেশ থেকে প্রথমে আপনাকে লিবিয়া যেতে হবে তারপরে দালালের মাধ্যমে ভূমধ্যসাগর পার করে এভাবে ইতালি যেতে হয়। পথিমধ্যে যদি ধরা খান তবে পুলিশের শাস্তি কিংবা বিভিন্ন কারণে মৃত্যুর সম্ভাবনা রয়েছে। 

বর্ডার লুকানোর মাধ্যমে ইতালি যাওয়াঃ বর্ডার লুকানোর মাধ্যমে ইতালি যাওয়া অর্থে যারা দালাল কিংবা পাচারকারী গাড়ির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ইতালি যায় তাদেরকে বোঝায়। যার মাধ্যমে কোন কিছুর মধ্যে লুকিয়ে ইতালিতে পৌঁছানো যায়। আপনি চাইলে এভাবেও যেতে পারেন। তবে সেই ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের রোড দুর্ঘটনা, বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা এবং পুলিশের কাছে ধরা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে কত টাকা লাগে

আমরা বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে চায়। তবে এই যেতে চাওয়ার মাঝে আমাদের সকলের মনে একটা প্রশ্ন জাগে যে ইতালি যেতে কত টাকা লাগে? আর তাই সকলের সুবিধার্থে এখন আমরা আলোচনা করব যে কোন মাধ্যমে কিংবা যে কোন ভিসায় ইতালি যেতে কত টাকা খরচ হতে পারে এ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে। চলুন নিচের টেবিল থেকে বিস্তারিত জেনে নিই। 

যে মাধ্যমে যাবেন যাওয়ার পদ্ধতি মোট খরচ যতটুকু সময় লাগতে পারে যতটুকু ঝুঁকি রয়েছে
বিমানে যাওয়া ভিসার মাধ্যমে ২-৬ লাখ টাকা ১-২ দিনের মতো একবারে কম
অবৈধভাবে পানি পথে যাওয়া ট্রলার বা জাহাজ ৫-৮ লাখ এর কম/বেশি ১৪-৩০ দিন কম/বেশি অনেক বেশি
ট্রানজিট হয়ে সড়কপথে যাওয়া দালাল, বাস বা হেটে ৩-৬ লাখ টাকা ২০-৪০ দিন কম/বেশি বেশি রয়েছে
ভূমধ্য সাগর হয়ে যাওয়া নৌকা বা ট্রলার ৫-৮ লাখ কম/বেশি ২-৫ দিন কম/বেশি জীবনহানি হতে পারে

কোন ভিসার মাধ্যমে গেলে কত টাকা লাগবে এটা জানুন। 
ভিসার ধরণ খরচের পরিমান ঝুঁকির পরিমান
স্টুডেন্ট ভিসা ৩-৫ লাখ এর মতো অনেক কম
কর্মী ভিসা ৩-৬ লাখ এর মতো কম রয়েছে
বিজনেস ভিসা ৪-৮ লাখ এর মতো কম রয়েছে
টুরিস্ট ভিসা ২-৪ লাখ এর মতো কম রয়েছে
বিবাহভিত্তিক ভিসা ১-২ লাখ এর মতো কম রয়েছে

ইতালিতে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি

বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার উপায় জানার পাশাপাশি আমাদের এটা জানা উচিত ইতালিতে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। কেননা আমরা যদি জানতে পারি সেখানে কোন কাজের চাহিদা বেশি রয়েছে তাহলে সেই কাজ ভালোভাবে শিখে ইতালিতে গিয়ে ভালো উপার্জন করতে পারব। চলুন এ সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত জানি। 

বর্তমান সময়ে ইতালিতে বিশেষ করে কৃষি, নির্মাণ খাত, হোটেল বা রেস্টুরেন্ট, ক্লিনার ইত্যাদি খাতে শ্রমিক বেশি নিয়ে থাকে। তাই বলা যায় ইতালিতে  এ সমস্ত কাজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এর পাশাপাশি ইতালিতে আপনি কেয়ারগিভার হয়ে যেতে পারেন। কেননা ইতালিতে বয়স্ক মানুষ অধিক পরিমানে রয়েছে এবং দিন দিন বাড়তেই আছে। আর তাদের 

দেখাশোনা করার জন্য ইতালি বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশ থেকে কেয়ারগিভার নিয়োগ দিয়ে থাকে। বর্তমান সময়ে এবং প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষ ইতালিতে ক্লিনার এবং হাউস কিপার হিসেবে যায়। কারণ সেখানে এই কাজের চাহিদা বেশি। আপনি যদি কর্মী ভিসা নিয়ে যেতে চান তবে সেখানে এই ধরনের কাজ করে ভালো ইনকাম করতে পারবেন।  

ইতালির টাকার মান কেমন জানুন 

বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে যাওয়ার জন্য যেমন আমাদের কিছু উপায় জানা উচিত ঠিক তেমনি আমরা যদি বিভিন্ন কাজের জন্য সেখানে যেতে চায় তবে আমাদের ইতালির টাকার মান জানা উচিত। এতে করে আমাদের কাজের প্রতি উৎসাহ জাগবে পাশাপাশি পূর্বে থেকে টাকার মান জেনে থাকলে পরবর্তীতে সুবিধা হবে। চলুন নিচের টেবিল থেকে জেনে নিই ইতালির টাকা বাংলাদেশের টাকায় রুপান্তর করলে কত হয়। 

ইতালির ইউরো বাংলাদেশি টাকা
১ ইউরো ১১৫ টাকা
৫ ইউরো ৫৭৫ টাকা
১০ ইউরো ১,১৫০ টাকা
১০০ ইউরো ১১,৫০০ টাকা
৫০০ ইউরো ৫৭,৫০০ টাকা
১০০০ ইউরো ১,১৫,০০০ টাকা

বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে

বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগে এ সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই অজানা। যার জন্য গুগলে এসে আমরা এটা সার্চ করি। এখন আমরা একদম ক্লিয়ারভাবে জানবো ইতালিতে যাওয়ার জন্য কি কি কাগজপত্র আমাদের জন্য বাধ্যতামূলক। চলুন জেনে নেওয়া যাক। 
বাংলাদেশ-থেকে-ইতালি-যাওয়ার-উপায়
  • ৬ মাস মেয়াদ থাকতে হবে এরকম আধুনিক পাসপোর্ট। 
  • আপনার সঠিক তথ্য দ্বারা পরিপূর্ণ ভিসা আবেদন ফর্ম। 
  • আপনার পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি ছবি লাগবে। এটা যেন সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড হয় এবং সাম্প্রতিক তোলা ছবি হয়। 
  • আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র কিংবা সেটা না থাকলে জন্ম নিবন্ধন কার্ডের ফটোকপি লাগবে। 
  • আপনার শেষ ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর ফটোকপি লাগবে। 
  • ভ্রমণের জন্য অবশ্যই আপনার ট্রাভেল ইন্সুরেন্স লাগবে। 
  • আপনি যে বাহনে করে আসবেন বিশেষ করে উড়োজাহাজে আসলে এয়ার টিকেট লাগবে। 
  • ইতালিতে গিয়ে আপনি যেই হোটেলে উঠবেন সেই হোটেলে থাকা প্রমান পত্র লাগবে। 
  • আপনার ভিসা পেয়ে জমা দেওয়ার রশিদ লাগবে। 
  • আপনি যদি ইতালিতে পড়াশোনার জন্য যান তাহলে আপনার স্কলারশিপ এর প্রমাণ পত্র লাগবে। 
  • পাশাপাশি আপনার একাডেমিক সার্টিফিকেট কিংবা মার্কশিট প্রয়োজন হবে। 
  • পড়াশোনার জন্য কিংবা কাজের জন্য ইতালি গেলে সেখানকার ভাষার দক্ষতা আপনাকে অর্জন করা লাগবে। 
  • এছাড়া কাজের জন্য যদি আপনি ইতালি যান তাহলে সেখানকার নিয়োগ দাতার স্পন্সরশিপ চিঠি কিংবা যোগাযোগ এর প্রমাণপত্র লাগবে। 
  • আপনার মেডিকেল টেস্ট এবং লোকাল পুলিশের অনুমতি এর প্রমাণপত্র লাগবে। 
  • ভ্রমণের জন্য যদি ইতালি যেতে চান তাহলে হোটেল বুকিং এবং রিটার্ন টিকিটের প্রমাণপত্র লাগবে। 
  • আপনি যদি ইতালিতে ব্যবসার জন্য চান তাহলে এসবের পাশাপাশি আপনার ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স লাগবে প্রমানপত্র হিসেবে। 

বাংলাদেশ থেকে ইতালি ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া 

আমাদের বাংলাদেশীদের জন্য বলতে গেলে ইতালি ইউরোপের অন্যতম একটি জনপ্রিয় গন্তব্যস্থল।কেননা ইতালিতে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ পড়াশোনার জন্য, কাজের জন্য কিংবা ব্যবসা বা ভ্রমণের জন্য গিয়ে থাকে। তাই বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার উপায় এর পাশাপাশি আমাদের এর ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ার সম্পর্কে জানতে হবে। যেটা আমরা এখন জানবো। 

  • শুরুতে এটা নির্ধারণ করুন আপনি বাংলাদেশ থেকে ইতালি কোন ভিসা নিয়ে যেতে চান। 
  • এরপরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন পাসপোর্ট, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, আবেদনপত্র, ভিসা ফর্ম ইত্যাদি কাগজপত্র সংগ্রহ করুন। এছাড়াও আরো কিছু কাগজপত্র লাগবে যেটা পূর্বের পয়েন্টে আলোচনা করা হয়েছে। 
  • অনলাইনে ভিসা আবেদনের জন্য ইতালিয়ান দূতাবাস ওয়েবসাইটে একটি প্রোফাইল তৈরি করুন।ওয়েবসাইটের নাম visa.vfsglobal.com । 
  • সেখান থেকে ঢাকায় অবস্থিত VFS সেন্টারে গিয়ে নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে আবেদন জমা দিয়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট সংগ্রহ করুন। 
  • এরপরে আপনাকে ভিসার ধরন অনুযায়ী ভিসা ফি জমা দিতে হবে। কোন ভিসার মূল্য কেমন সেটা আমরা উপরে আলোচনা করেছি। 
  • অতঃপর নির্ধারিত একটি সময়ে সংগ্রহীত কাগজপত্র অর্থাৎ পাসপোর্ট, ছবি, আবেদন পত্র ইত্যাদি জমা দিন। 
  • আপনার ভিসা প্রসেসিং হবে কমপক্ষে ১০-৩০ দিন বা কম/বেশি সময় লাগতে পারে। তাই নিয়মিত খোঁজ রাখুন।
  • অতঃপর আপনার ভিসা গ্রহণযোগ্য হয়ে গেলে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন কিংবা কুরিয়ারের মাধ্যমে নিতে পারবেন। 

ইতালিতে কর্মী ভিসা পাওয়ার উপায়

ইতালিতে বিভিন্ন রকমের কাজের জন্য প্রতিবছর এখানে প্রচুর পরিমাণে কর্মী নিয়োগ করা হয়। যেসব কর্মীগুলো বাংলাদেশ সহ আরো কিছু দেশ থেকে আসে। আর আমরা যদি ইতালিতে কর্মী ভিসা পেতে চাই তবে এর কিছু উপায় আমাদের জানা উচিত। যেটা আমরা এখন আলোচনা করব। তবে চলুন ইতালিতে কর্মী ভিসা পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জেনে নিই। 
বাংলাদেশ-থেকে-ইতালি-যাওয়ার-উপায়
পরিচিত মানুষের মাধ্যমে চাকরি পাওয়াঃ ইতালিতে আপনার যদি কোন বন্ধু বা আত্মীয় থাকে এবং তারা আপনাকে যে কোন চাকরির ব্যবস্থা যদি করে দেয় এবং সেই কোম্পানির মালিক যদি রাজি থাকে তাহলে আপনি সেখানে কর্মী ভিসা নিয়ে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে সেই কোম্পানির মালিক আপনাকে স্পনসরশীপ করে দেবে যার মাধ্যমে আপনি ইতালিতে কর্মী ভিসা নিয়ে যেতে পারবেন। 

বিশেষ স্কিল অর্জন করে আবেদনঃ আমাদের মধ্যে অনেকেরই বিভিন্ন কাজের প্রতি দক্ষতা দক্ষতা থাকে। সেক্ষেত্রে আপনি যদি ইলেকট্রিশিয়ান, কৃষি জমিতে কাজ, রাজমিস্ত্রি বা কাঠমিস্ত্রি ইত্যাদির কাজ ভালো পারেন তবে সেখানে কর্মী ভিসা পাওয়া আপনার জন্য সহজ হবে। তার জন্য আপনার সেই কাজের একটি সার্টিফিকেট থাকা লাগবে পাশাপাশি ইতালিতে চাকরির খোঁজ করতে হবে। 

বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা

আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে চান তবে সেখানে যাওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা কেমন হওয়া উচিত? এ সম্পর্কে আমাদের সঠিক ধারণা নেই। তবে ইতালি যাওয়ার ক্ষেত্রে এই ধারণা আমাদের অবশ্যই থাকতে হবে। আপনার যাওয়ার উদ্দেশ্যের উপর ভিত্তি করে শিক্ষাগত যোগ্যতা বিভিন্ন হতে পারে। চলুন বেশি কথা না বাড়িয়ে সেটা জেনে নিই। 

  • স্টুডেন্ট ভিসাঃ আপনি যদি একজন স্টুডেন্ট হন এবং স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে ইতালি যেতে চান, তবে আপনাকে সর্বনিম্ন এইচএসসি পাশ থাকতে হবে। এরপরে আপনি স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে সেখানে যেতে পারবেন। 
  • কর্মী ভিসাঃ সাধারণত আমাদের বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার মূল কারণ হচ্ছে টাকা ইনকাম। যার জন্য কর্মী ভিসা নিয়ে আমরা ইতালি যেতে পারি। আর আপনি যদি এসএসসি পাস করেন তবে খুব সহজেই কর্মী ভিসা নিয়ে ইতালি যেতে পারবেন। 
  • বিজনেস ভিসাঃ আমরা অনেকেই রয়েছে যারা ব্যবসা করার জন্য ইতালি যেতে চাই। আর এই বিজনেস ভিসা পাওয়ার জন্য আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতাকে তেমন কোন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। ব্যবসায়িক কাজে আপনার অভিজ্ঞতা, ট্রেড লাইসেন্স বা কত টাকা ইনভেস্ট করে ব্যবসা করতে পারবেন এর ওপরেই নির্ভর করে এই ভিসা পেতে পারেন। 
  • আরো অন্যান্য ভিসা সমূহঃ উপরোক্ত ভিসা সহ ছাড়া আরও যে সমস্ত ভিসা যেমন টুরিস্ট ভিসা, ফ্যামিলি ভিসা ইত্যাদি রয়েছে এসব ভিসার জন্য আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা তেমন কোন প্রয়োজন হয় না। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র আপনার নিজস্ব পরিচয় পত্র থাকলেই আপনি যেতে পারবেন।

বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়া সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর 

বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার উপায় জানার পাশাপাশি আমাদের মনের মধ্যে আরও অনেক রকমের প্রশ্ন থেকে থাকে যেটা আমরা সহজে জানতে পারি না। আর তাই এখন আমরা বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়া সম্পর্কিত এমন কিছু প্রশ্ন উত্তর এক কথায় জানব যেগুলো আমাদের জন্য অনেক উপকারী হবে। চলুন নিচে সেগুলো জেনে নিই। 

প্রশ্নঃ বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে মোট কত টাকা লাগে? 
উত্তরঃ ভিসার ধরন এবং রাস্তার ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে মোট ৪-১২ লক্ষ টাকার মত লাগতে পারে। 
বাংলাদেশ-থেকে-ইতালি-যাওয়ার-উপায়
প্রশ্নঃ বাংলাদেশ থেকে ইতালি কিভাবে যাওয়া যায়? 
উত্তরঃ আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে যেতে চান তাহলে আপনার বৈধ ভিসা এবং পাসপোর্ট ও সেখানে বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে যেতে পারেন। 

প্রশ্নঃ ইতালি যাওয়ার জন্য কোন ভিসা সবচেয়ে সহজ? 
উত্তরঃ আপনি যদি টাকা ইনকামের জন্য ইতালিতে যেতে চান তবে মৌসুমী কর্মী ভিসা আপনার জন্য সবচেয়ে সহজ এবং উত্তম হতে পারে। 

প্রশ্নঃ ইতালি যাওয়ার জন্য ট্রাভেল এজেন্সি কি জরুরী? 
উত্তরঃ ইতালি যাওয়ার জন্য ট্রাভেল এজেন্সি তেমন জরুরি না। আপনি নিজেও অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। 

প্রশ্নঃ অবৈধ পথে ইতালি গেলে কি হতে পারে? 
উত্তরঃ আপনি যদি অবৈধ পথে ইতালিতে চান সেক্ষেত্রে আইনত ঝামেলা কিংবা দালালের ধোকায় পড়া সহ প্রাণহানির মত সমস্যা হতে পারে। 

প্রশ্নঃ বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে কত দিন লাগতে পারে? 
উত্তরঃ আপনি যদি ফ্লাইটে করে বাংলাদেশ থেকে এখানে যান সে ক্ষেত্রে সময় লাগবে মোট ৮-১২ ঘণ্টার মতো। আর ভিসা প্রসেসিং এ সময় লাগবে ৩-৬ সপ্তাহের মত। 

প্রশ্নঃ কর্মী ভিসা নিয়ে ইতালি গেলে বেতন কেমন হতে পারে? 
উত্তরঃ আপনি যদি কর্মী ভিসা নিয়ে ইতালি যেতে পারেন তাহলে প্রতি মাসে ১২০০-১৮০০ ইউরো এর মত ইনকাম করতে পারবেন। 

প্রশ্নঃ ইতালি কি এখন বাংলাদেশের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দিচ্ছে? 
উত্তরঃ হ্যাঁ। এই ২০২৫ সালে ইতালির Flussi কোটা খোলা আছে। তাই এখন ইতালি যাওয়ার জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে পারেন। 

আমাদের শেষ কিছু কথা 

প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেল থেকে আপনি খুব সুন্দর ভাবে জানলেন বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার উপায়সহ আরো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে। তার মধ্যে বিশেষ করে ইতালি কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি, ইতালিতে যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে এবং কিভাবে ভিসা আবেদন করবেন, ইতালিতে যাওয়া সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন ও উত্তর আপনার জন্য

অনেক কার্যকরী হতে পারে। তাই আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে চান তাহলে উপরোক্ত বিষয়গুলো জানা আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। আপনি যদি নিয়মিত এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে চান তবে আমাদের এই ওয়েবসাইট এখনই ফলো করে রাখতে পারেন।কেননা এখানে এই ধরনের আর্টিকেল প্রতিনিয়ত প্রকাশিত হয়।  

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

হ্যাপিনেস ভ্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url