ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয় -৮ টি কার্যকারী উপকার জানুন

ভাতের মাড় যেটাকে গ্রামীণ ভাষায় বলা হয় ফ্যান। এই মাড় অথবা ফ্যান আমাদের চুলে দিলে মিলবে বেশ কিছু কার্যকরী উপকার। আপনি যদি জানতে চান ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয় তাহলে আজকের এই আর্টিকেল শুধুমাত্র আপনার জন্যই।আমাদের চুলের জন্য উপকারী ভাতের মাড় নিয়ে 
ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয়
আজকে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। চুলের যত্ন কে না করতে চায়। যদি সেটা হয় একদম ফ্রিতে এবং খাটি জিনিস দ্বারা তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। তার জন্য আজকে আমরা জানবো ভাতের মাড় আমাদের চুলে দিলে কি এমন উপকার হতে পারে। সে সম্পর্কে জানতে নিচে বিস্তারিত পড়ুন। 

পোস্ট সূচীপত্রঃ ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয় 

ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয় - ৮টি কার্যকারী উপকার 

ভাতের মাড় এক ধরনের অবহেলিত উপাদান বললেই চলে। কেননা প্রতিদিনের জীবনে ভাতের মাড় আমরা ফেলে দিই। কিন্তু ভাতের মাড়ে এমন কিছু পুষ্টিগুণ উপাদান রয়েছে যেটা আমাদের চুলে প্রয়োগ করলে অসাধারণ কিছু কার্যকারিতা এনে দেয়। তাই এখন আমরা জানবো আমাদের চুলে ভাতের মাড় প্রয়োগ করার ফলে কোন ৮টি কার্যকরী উপকার পাওয়া যায়। 

  • চুল দ্রুত লম্বা ও ঘন হওয়াঃ ভাতের মাড়ে বেশ কিছু উপাদানের মধ্যে ইনোসিটল নামে এক ধরনের বিশেষ উপাদান রয়েছে। যার ফলে ভাতের মাড় আমাদের চুলে লাগানোর ফলে এই উপাদান চুলের গোড়া মজবুত করে এবং আমাদের চুলের বৃদ্ধি বাড়ায়। আর নিয়মিত যদি এটি ব্যবহার করা হয় তবে আমাদের চুল ঘন এবং শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে।
  • চুল পড়া কমিয়ে দেওয়াঃ আমাদের মধ্যে প্রায় সকলেরই চুল পড়ার সমস্যাটি রয়েছে। আর এই ভাতের মাড় আমাদের চুল ঘন এবং লম্বা করার পাশাপাশি এটি অতিরিক্ত চুল পড়া কমিয়ে দেয়। এটি চুলে প্রয়োগ করার ফলে চুলের শিকড় মজবুত করে এবং চুলের ভঙ্গুরতা কমিয়ে দেয়। যার ফলে আমাদের চুল পড়া কমে যায়।
  • খুশকি দূর করে দেয়ঃ আমাদের মাথায় যদি খুশকি থেকে থাকে তবে ভাতের মাড় প্রয়োগ করার ফলে সে খুশকি দূরীভূত হয়। কেননা ভাতের মাড়ে খুশকি দূর করতে সহায়ক অ্যান্টি-ফাঙ্গাল নামে এক ধরনের উপাদান রয়েছে যেটা আমাদের মাথার ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর করে এবং খুশকি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
  • চুলকে নরম ও উজ্জ্বল করাঃ যেহেতু ভাতের মাড় আমাদের চুলে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে সেহেতু এটি চুলে প্রয়োগ করার ফলে আমাদের চুল নরম এবং উজ্জ্বল হয়। আমরা যদি নিয়মিত চুলে ভাতের মাড় ব্যবহার করে তবে এটি চুলে নরম ও মসৃণতা ভাব এনে আমাদের চুলে ঝলমলে ভাব এনে দিতে সাহায্য করে।
  • চুলের রুক্ষতা দূর করাঃ আমাদের অনেকের চুল বিভিন্ন কারণে বা সঠিক যত্নের অভাবে রুক্ষ হয়ে ওঠে। তবে এর জন্য চিন্তার আর কোন কারণ নেই। কেননা ভাতের মাড় চুলে ব্যবহার করার ফলে এটি আমাদের চুলের জট কিংবা রুক্ষতা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। পাশাপাশি একটি চুলের আদ্রতা ধরে রাখে।
  • মাথার ত্বকের চুলকানি প্রতিরোধঃ ভাতের মাড় যদি প্রতিনিয়ত আমাদের মাথায় দেওয়া হয় তাহলে এতে থাকা প্রাকৃতিক স্টার্চ এবং বিশেষ কিছু পুষ্টি উপাদান আমাদের মাথার ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাল সংক্রামক প্রতিরোধ করে থাকে। যার ফলে আমাদের মাথার ত্বকের চুলকানি এবং বিভিন্ন সংক্রামক প্রতিরোধ হয়ে থাকে।
  • চুলের ময়লা ও অতিরিক্ত তেল দূর করাঃ আমাদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছে যাদের চুলে তেলতেলে ভাব আছে। আবার বেশিরভাগ সময় চুল ময়লা হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে ভাতের মাড় যদি চুলে ব্যবহার করা হয় তবে এটি আমাদের চুলে প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবে কাজ করবে। যার ফলে চুল থেকে ধুলো ময়লা কিংবা অতিরিক্ত তেল দূর হয়ে যেতে পারে।
  • চুলের দিঃমুখী সমস্যা কমানোঃ অনেক সময় আমাদের চুলের ডগা ফেটে গিয়ে চুল দুর্বল হয়ে যায়।যেটা দেখতে খুবই খারাপ লাগে। তার জন্য চলে যদি ভাতের মার ব্যবহার করা হয় তাহলে এটি আমাদের চুলের ডগা মজবুত করবে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে।

ভাতের মাড় চুলে দেওয়ার নিয়ম বা প্রক্রিয়া 

আমাদের চুলের জন্য ভাতের মাড় অসাধারণ একটি উপাদান। যা আমাদের চুলকে লম্বা, ঘন এবং মসৃণ করে তোলে। তবে ভাতের মাড় চুলে দেওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে যেটা আমাদের জানা জরুরী। কেননা আমরা যদি এর ব্যবহারের নিয়ম না জেনে এটি ব্যবহার করি তাহলে আমাদের চুলে অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব হতে পারে। তাহলে চলুন ভাতের মাড় চুলে দেওয়ার নিয়ম জেনে নিন। 

  • প্রথমে ভাত রান্নার পরে নিঃসৃত মাড় সংগ্রহ করুন। 
  • এরপরে সেই ভাতের মাড় ঠান্ডা করে ছাকনি দিয়ে ছেঁকে নিন যেন ভাতের কোন অংশ না থাকে। 
  • এছাড়াও আপনি চাইলে একটি ফ্রিজে ৩-৪ দিন পর্যন্ত সংগ্রহ করে রাখতে পারেন। 
  • ভাতের মাড় চুলে লাগানোর পূর্বে এটি যদি ঘন হয় তবে হালকা পানি মিশ্রণ করতে পারেন। এতে করে এটি সহজে চুলে লাগানো যাবে। 
  • ভাতের মাড় চুলে লাগানোর পূর্বে চুল ভালোভাবে শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। 
  • তারপরে ভাতের মাড় সুন্দর করে মাথা এবং চুলের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত খুব সুন্দর ভাবে লাগান। 
  • এটি মাথায় লাগানো হয়ে গেলে মাথার ত্বক ও চুল যেন ভালোভাবে শোষণ করতে পারে তার জন্য ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন। 
  • সবশেষে হালকা গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। চুল ধোয়ার জন্য চাইলে কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন। 
  • মাথার চুল দ্রুত লম্বা, ঘন এবং স্বাস্থ্যকর করে তুলতে সপ্তাহে ২-৩ দিন এটি ব্যবহার করুন। (এই সম্পর্কে আরো সুন্দরভাবে জানতে নিচে বিস্তারিত পড়ুন) 

কতদিন পর পর ভাতের মাড় চুলে দিতে হবে 

কতদিন পর পর ভাতের মাড় আমাদের চুলে দিতে হবে এটি নির্ভর করবে চুলের ধরন এবং প্রয়োজনের ওপর। ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয় এ সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে জেনে গেছি। তবে এর পাশাপাশি আমাদের জানা উচিত কতদিন পর পর এবং কোন ধরনের চুলের জন্য ভাতের মাড় কিভাবে ব্যবহার করতে হবে। চলুন বেশি কথা না বাড়িয়ে বিষয়টা জেনে নিই। 
ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয়
আমাদের মধ্যে যাদের স্বাভাবিক চুল তাদের চুলকে উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর রাখতে সপ্তাহের অন্তত ২-৩ বার ভাতের মাড় ব্যবহার করলেই যথেষ্ট। কিন্তু যাদের চুল পড়ে এবং চুলের গোড়া খুবই দুর্বল তারা সপ্তাহে ৩-৪ বার ভাতের মাড় চুলে লাগাতে পারেন। এতে করে চুলের গোড়া যেমন মজবুত হবে ঠিক তেমনি চুল পড়া কমে যেতে পারে। আবার আমাদের মধ্যে রুক্ষ এবং 

শুষ্ক চুল অনেকেরই রয়েছে। তাদের জন্য ভাতের মাড় সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করলেই হবে। কিন্তু এর সাথে অ্যালোভেরা কিংবা নারকেল তেল বিশ্বে ব্যবহার করলে আরো ভালো ফলাফল পেতে পারেন।পাশাপাশি যাদের চুলে অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব এবং নতুন চুল গজানোর জন্য যারা ভাতের মাড় ব্যবহার করতে চান তারা সপ্তাহে ৩ দিন দিলেই যথেষ্ট হবে। 

ভাতের মাড় দিয়ে নাইট ক্রিম তৈরি পদ্ধতি 

আমাদের ত্বকের যত্নে বিভিন্ন রকম প্রাকৃতিক উপাদানের মধ্যে ভাতের মাড় একটি অসাধারণ উপাদান। কেননা বাজারের বিভিন্ন রকমের নাইট ক্রিম এর মধ্যে ভাতের মাড় দিয়ে ঘরোয়া ভাবে তৈরিকৃত নাইট ক্রিম সেরা। যা আমাদের ত্বকে উজ্জ্বল করে এবং বয়সের ছাপ কমিয়ে দিতে সক্ষম। আমরা জেনেছি ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয়। তবে আমরা এখন জানবো ভাতের মাড় দিয়ে কিভাবে নাইট ক্রিম তৈরি করতে হয়। 

  • প্রথমে ভাত রান্না করার পরে ২ কাপের মতো ভাতের মাড় সংগ্রহ করে সেটি ঠান্ডা করে নিতে হবে। 
  • এরপরে একটি পরিষ্কার পাত্রে ঠান্ডা ভাতের মার এবং এক চামচ অ্যালোভেরা জেল খুব সুন্দরভাবে মিশ্রণ করুন। 
  • এর সাথে ১ চামচ বাদাম অথবা নারিকেলের তেল যোগ করে সেটি খুব সুন্দর ভাবে মিশিয়ে নিন। 
  • আপনি যদি মিশ্রণটি আরো কার্যকরী করতে চান তাহলে এসবের সাথে অতিরিক্ত ১ চামচ গোলাপ জল দিন এবং ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। 
  • পাশাপাশি এর সাথে ভিটামিন-ই এর একটি ট্যাবলেট নিয়ে সেটা ফুটো করে ভেতরের তেল যোগ করতে পারেন। 
  • এ সমস্ত উপাদান একত্রে হয়ে গেলে খুব ভালোভাবে মিশিয়ে ক্রিমের মতো তৈরি করুন। 
  • সবশেষে সেই ক্রিমটি কোন কাজের কন্টিনিয়ারে কিংবা বায়ুরোধক পাত্রে সংগ্রহ করুন। চাইলে ফ্রিজেও সংগ্রহ করতে পারেন। এটি কমপক্ষে ৭ দিন পর্যন্ত ভালো থাকবে। 

ভাতের মাড় খাওয়ার উপকারিতা কি 

আমরা অনেকেই রয়েছি যারা ভাত রান্না করার পরে তার অতিরিক্ত পানি অর্থাৎ ভাতের মাড় ফেলে দিয়ে থাকি। কিন্তু আমরা কি জানি এই ভাতের মাড়ে কি পরিমাণ উপকার রয়েছে? এই মাড়ে রয়েছে অধিক পরিমাণে পুষ্টি উপাদান। বিশেষ করে এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, 

ভিটামিন ডি, খনিজ উপাদান, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, কার্বোহাইড্রেট ইত্যাদি রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। আর এই সকল উপাদান গুলো আমাদের শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং আমাদের হজম শক্তি উন্নতি করে। 
ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয়
বিশেষ করে আমাদের মধ্যে যারা খুব সহজেই ক্লান্ত হয়ে যায় কিংবা যাদের শরীরে দুর্বলতা রয়েছে তারা যদি প্রতিনিয়ত ভাতের মাড় খায় তবে এটি তাদের শরীরে প্রাকৃতিকভাবে শক্তি যোগাবে। এছাড়াও যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা রয়েছে, তারা ভাতের মাড় খাওয়ার ফলে এতে থাকা ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা দূর করে দেয়।

যেহেতু এটি আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে সহজে উন্নত করে এবং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে, সেহেতু ভাতের মাড় শিশু এবং বৃদ্ধ মানুষের জন্য আরও বেশি কার্যকরী। আপনি হয়তো এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয় এবং ভাতের মাড় খাওয়ার ফলে কি কি উপকার রয়েছে। 

ভাতের মাড় দিয়ে ত্বকের যত্ন কিভাবে নেব 

ভাতের মাড়ে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান থাকায় এটি শুধুমাত্র আমাদের চুলের যত্নে নয় বরং ত্বকের যত্নেও বিশেষ কার্যকরী। আর সেই জন্য এখন আমরা জানবো ভাতের মাড় দিয়ে কিভাবে আমাদের ত্বকের যত্ন নেওয়া উচিত। ভাতের মাড়ের বেশ কিছু উপকার আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক ভাতের মাড় দিয়ে আমরা কিভাবে ত্বকের যত্ন নেব। 

  • তুলা কিংবা নরম কোন কাপড় দিয়ে ঠান্ডা ভাতের মাড় আলতো করে মুখে লাগিয়ে দিতে পারেন।এরপরে ৫-৭ মিনিট রাখার ফলে এটি আমাদের ত্বক থেকে ময়লা বা তৈলাক্ত ভাব দূর করে দিতে পারে। 
  • ত্বককে সতেজ এবং মসৃণ রাখার জন্য ঠান্ডা ভাতের মাড় একটি বোতলের মধ্যে রাখতে পারেন এবং প্রতিদিন সেটাই স্প্রে করতে পারেন। 
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার জন্য দুই চামচ ভাতের মাড় ও এর সাথে ১ চামচ বেসন ত্বকে লাগাতে পারেন। পরবর্তীতে ১০-১৫ মিনিট পরে সেটা ধুয়ে ফেললে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে। 
  • এছাড়াও আপনি যদি আপনার ত্বকে নরম এবং কোমল করতে চান তাহলে এক চামচ ভাতের মাড়ের সাথে এক চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশ্রণ করে লাগিয়ে দিতে হবে। এটি আমাদের ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে অধিক কার্যকরী। 
  • কারো চেহারায় যদি ব্রণের দাগ থাকে তাহলে ভাতের মা তুলোর সাথে হালকা করে লাগিয়ে ব্রনের উপরে প্রলেপ করে দিতে পারেন। নিয়মিত এটি করলে আপনার ব্রণের দাগ কমে যেতে পারে। 
  • ভাতের মাড়ের সাথে যদি এক চামচ মধু মিশিয়ে আমাদের তাকে লাগানো যায় তাহলে একটি আমাদের বয়সের ছাপ কমিয়ে দিতে পারে। 
  • তোকে যদি রোদ পোড়া ভাব চলে আসে তাহলে ভাতের মার ফ্রিজে রেখে কিংবা যেকোনোভাবে ঠান্ডা করে সেটা পোড়ার উপরে লাগালে সে ভাবটা কমে যেতে পারে। 

ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হয় 

ভাতের মাড় সম্পর্কে আমাদের মধ্যে অনেকেরই এই প্রশ্ন জাগে যে ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হয়? ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয়, ভাতের মাড় ত্বকে লাগালে কি হয় এবং কিভাবে লাগাতে হয় এ সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছাড়াও আমাদের এটা যেন গুরুত্বপূর্ণ ভাতের মাড় খেলে মোটা হয় কিনা। এর এক কথায় উত্তর হিসেবে আমরা বলতে পারি, হ্যাঁ। চলুন নিচে বিস্তারিত জানি। 

ভাতের মাড়ে এমন কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে এবং আমরা সেটা কতটুকু খাচ্ছি ও কিভাবে খাচ্ছি মূলত এর উপরে আমাদের মোটা হওয়া নির্ভর করে। ভাতের মাড়ে বিদ্যমান কার্বোহাইড্রেট, ক্যালোরি বা প্রাকৃতিক শর্করা আমাদের শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে এবং শরীরের ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এর পাশাপাশি 

আপনি যদি অতিরিক্ত এবং অনিয়ন্ত্রিতভাবে ভাতের মাড় খেতে থাকেন এবং শারীরিক পরিশ্রম কম করেন সেক্ষেত্রে আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। ফলে আপনি মোটা হয়ে যেতে পারেন।কিন্তু আপনি যদি দুর্বল হন কিংবা নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাহলে মোটা হওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই।হয়তো আপনি এটা খুব সুন্দর করে বুঝে গেছেন। 

ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক কি 

আমরা হয়তো ইতিমধ্যে বুঝে গেছি ভাতের মাড় আমাদের চুলসহ শরীরের জন্য কতটা উপকারী। তবে আমরা যদি এর অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার করি তবে এটা আমাদের শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই ভাতের মাড় খাওয়ার পূর্বে কিংবা শরীরের কোন অংশে ও চুলে লাগানোর পূর্বে এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত। তবে চলুন ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জেনে নিই। 
ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয়
  • আমরা যারা আমাদের শরীরকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাই এবং অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি থেকে কমাতে চায় তাহলে অনিয়ন্ত্রিত ভাতের মাড় খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা এটি আমাদের শরীরে ওজন বৃদ্ধি করে দিতে পারে। 
  • ভাতের মাড় অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার ফলে আমাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। 
  • ভাতের মাড়ে অনেক পরিমাণে পুষ্টি উপাদান এবং খনিজ উপাদান থাকার ফলে আমরা যদি ভাত থেকে এটি ফেলে দিই তাহলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি কমে যেতে পারে। যার ফলে আমাদের শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। 
  • অতিরিক্ত পরিমাণে ভাতের মাড় খাওয়ার ফলে আমাদের মধ্যে অনেকেরই হজমজমিত সমস্যা কিংবা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। 
  • এছাড়াও অতিরিক্ত পরিমাণে ভাতের মাড় খাওয়ার ফলে এতে বিদ্যমান শর্করা আমাদের শরীরে অতিরিক্ত চর্বি সৃষ্টি করতে পারে। 

সবশেষে আমাদের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলে আপনি জানলেন ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে। পাশাপাশি আপনি জানলেন ভাতের মাড় আরো কি কি কাজে ব্যবহার করা হয় এবং ভাতের মার দিয়ে কিভাবে ক্রিম বানিয়ে সেটা আপনি ত্বকে ব্যবহার করতে পারবেন এই সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আমি আশা করি আজকের আর্টিকেল আপনার জন্য অনেক বেশি কার্যকরী হবে। আপনি যদি নিয়মিত এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে চান তাহলে আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করুন। এখানে আপনি প্রতিনিয়ত এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পাবেন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

হ্যাপিনেস ভ্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url