মরিঙ্গা ট্যাবলেট এর উপকারিতা -১০ টি উপকারিতা জানুন
মরিঙ্গা ট্যাবলেট এর উপকারিতা কি আপনি সেটা জানতে চান? ঘরোয়া ভাবে আপনি
কিভাবে মরিঙ্গার ট্যাবলেট বানাবেন? তাছাড়া মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার উপকারিতা
কি? আপনি যদি এ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেল
মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
প্রিয় পাঠক, আমরা আজকে মরিঙ্গা ট্যাবলেট এর উপকারিতা সহ মরিঙ্গার যাবতীয়
গুনাগুন সম্পর্কে এবং এটি কি কি কাজে ব্যবহার করা হয় এ সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
নিয়ে আলোচনা করবো। তাই আজকের আর্টিকেল আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে
চলেছে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ মরিঙ্গা ট্যাবলেট এর উপকারিতা
মরিঙ্গা ট্যাবলেট এর ১০ টি উপকারিতা
মরিঙ্গা এমন এক ধরনের উদ্ভিদ যেটা আমাদের শরীরে সুপার ফুড হিসেবে কাজ
করে। কেননা এতে থাকা স্বাস্থ্যকর উপাদান সমূহ আমাদের শরীরে বিভিন্ন উপকার
সাধন করে থাকে। বিশেষ করে মরিঙ্গা খাতার ট্যাবলেট আমাদের শরীরের জন্য
অত্যন্ত কার্যকরী। তাই চলুন জেনে নিই মরিঙ্গা ট্যাবলেট এর
উপকারিতা অর্থাৎ বিশেষ ১০ টি উপকারিতা সম্পর্কে।
1. অধিক পরিমাণে পুষ্টির উপাদানঃ আমাদের দেহকে সুস্থ এবং সবল রাখার জন্য
মরিঙ্গা ট্যাবলেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেননা এই মরিঙ্গা
ট্যাবলেটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন
সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি সহ আরও কিছু
উপাদান। আর এ সকল পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দূর করে
থাকে।
2. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ মরিঙ্গা ট্যাবলেট সেবনের ফলে এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।কেননা মরিঙ্গায় রয়েছে একটি অক্সিডেন্ট এবং জীবাণু নাশক এমন কিছু উপাদান যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ-জীবনের সাথে লড়াই করে আমাদেরকে অসুস্থতা থেকে সুরক্ষা দেয়।
5. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ বিভিন্ন রকমের উপকারের পাশাপাশি মরিঙ্গা পাতার
ট্যাবলেট আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা পালন
করে। এটি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রেখে উচ্চ রক্তচাপ কমায়। এতে
থাকা অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি আমাদের হৃদযন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখে এবং হার্ট
অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।
6. ত্বক ও চুলের যত্নেঃ আমাদের ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে ভিটামিন ই এবং ভিটামিন সি অধিক কার্যকরী যেটা মরিঙ্গা ট্যাবলেটে রয়েছে। তাই এই ট্যাবলেট খাবার ফলে অন্যান্য উপকারের পাশাপাশি এটি আমাদের চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করবে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
7. আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধিঃ মরিঙ্গা যেমন আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ দূর করে ঠিক তেমনি এটি আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর প্রভাবে আমাদের ডিপ্রেশন এবং মানসিক সমস্যা সহ যাবতীয় ক্ষতিকর কিছু প্রতিরোধ হয়।
9. চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিঃ আমাদের চোখের বিভিন্ন সমস্যা বিশেষ করে রাতকানা রোগ সহ যাবতীয় কিছু সমস্যা দূর করতে মরিঙ্গা ট্যাবলেট সেবন হতে পারে খুব ভালো একটি সমাধান। কেননা এই ট্যাবলেটে থাকা ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন আমাদের চোখের জন্য অধিক কার্যকরী। মূলত এসব উপাদানের কারনেই উপরোক্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।
10. ঘুমের উন্নতি ঘটায়ঃআমাদের মধ্যে যাদের রাতে ঠিকভাবে ঘুম হয় না তারা যদি নিয়মিত ট্যাবলেট সেবন করে তাহলে এটি আমাদের ঘুমের উন্নতি করবে। কেননা মরিঙ্গা ট্যাবলেট এ থাকা ম্যাগনেসিয়াম আমাদের স্নায়ুতন্ত্র কে শিথিল করে আরামদায়ক ঘুম এনে দেয়।
মরিঙ্গা ট্যাবলেট এর দাম কত
মরিঙ্গা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বিভিন্নভাবে উপকারী হয় এর প্রায় কয়েক
ব্র্যান্ডের ট্যাবলেট রয়েছে। তাই ব্র্যান্ড ও গুণগত মান অনুসারে এর দাম
ভিন্ন হতে পারে। তবে আমরা এখন এর কয়েক রকম ব্র্যান্ড এবং দাম নিয়ে
আলোচনা করব যেটা জানার পরে আমাদের একটা সুন্দর ধারণা চলে আসবে। আবার দোকানের
উপরে নির্ভর করে এর দাম কম বেশি হতে পারে সে ক্ষেত্রে আমাদের সাবধান থাকতে
হবে।
ACME নামক একটি কোম্পানি থেকে ৫০০ মিলিগ্রাম মরিঙ্গা ট্যাবলেট পাওয়া
যায়। তাদের একটি পাতায় মোট ১০ টি ট্যাবলেট থাকে যার দাম ১০০ টাকার
মতো। অর্থাৎ তারা প্রতি পিস ট্যাবলেট এ ১০ টাকা করে নেয়। আবার মর্ডান
হারবাল গ্রুপ থেকে প্রায় ৫০ টি মরিঙ্গা ট্যাবলেটের বোতল পাওয়া
যায়।
যেখানে একটি বোতলের দাম মাত্র ৮৫ টাকা। আবার আপনি যদি মরিঙ্গা গেইন
ট্যাবলেট Trend Mart থেকে কিনেন তাহলে এর বর্তমান দাম পড়বে প্রায় ৭০০
টাকার মতো। এই থেকে আমরা বুঝতে পারি কোম্পানি এবং গুণগত মানের ওপর ভিত্তি
করে মরিঙ্গা ট্যাবলেট বিভিন্ন দামে পাওয়া যায়।
ঘরোয়াভাবে মরিঙ্গা ট্যাবলেট তৈরির পদ্ধতি
মরিঙ্গা ট্যাবলেট এমন কিছু স্বাস্থ্যকর উপাদান রয়েছে যেটা খাবার ফলে আমাদের
শরীরে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তবে বাজারের মরিঙ্গা
ট্যাবলেট কিনে খাওয়ার চাইতে আমরা যদি ঘরে ভাবে মরিঙ্গা ট্যাবলেট তৈরি করে খেতে
পারি তাহলে এটি আরো বেশি কাজে দেবে। ঘরোয়া ভাবে ট্যাবলেট কিভাবে তৈরি করা
যায় চলুন সে সম্পর্কে জেনে নিই।
- প্রথমেই আমাদের তাজা এবং পরিষ্কার মরিঙ্গা পাতা সংগ্রহ করতে হবে। পাতায় যদি ময়লা থাকে তাহলে সেটি জীবাণুমুক্ত করার জন্য ভালো পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
- এরপরে সেই পাতাগুলো শুকানোর জন্য এক নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে দিতে হবে। শুকানোর ক্ষেত্রে পাতাগুলো সরাসরি রোদে না দিয়ে ছায়াযুক্ত স্থানে শুকাতে হবে।
- পাতাগুলো ভালোভাবে শুকিয়ে গেলে আমাদের ব্লেন্ডার দিয়ে সুন্দর করে পাতাগুলো গুঁড়ো করে নিতে হবে। পাতাগুলো গুঁড়ো করার পরে সেগুলো এমন ছাকনা দিয়ে ছেকে নিতে হবে যেন শুধুমাত্র এর মিহী গুঁড়োগুলো থাকে।
- এসব কিছু কমপ্লিট হলে সেইগুলো গরম পানির সাথে মিশাতে হবে। তবে ট্যাবলেটের গঠন ধরে রাখার জন্য আপনি চাইলে এর সাথে মধু কিংবা দুধের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন।
- সবকিছু মিশ্রণ করা হয়ে গেলে হাত দিয়ে ছোট ছোট ট্যাবলেট আকারে প্রস্তুত করুন। এছাড়াও আপনি চাইলে সাচ ব্যবহার করে এটি করতে পারেন। পরিশেষে ৫-৬ ঘণ্টার মতো শুকিয়ে নিন।
- ট্যাবলেটগুলো শুকিয়ে গেলে বায়ুরোধক পাত্রে অর্থাৎ কাঁচের বোতল বা এয়ারটাইট কন্টেনিয়ারে সংগ্রহ করুন।
মরিঙ্গা ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
মরিঙ্গা ট্যাবলেট অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর হওয়ায় এটি সকলেই খেতে পারে। তবে
ব্যক্তি ও বয়স ভেদে এর সেবন ভিন্ন হতে পারে।অর্থাৎ আমাদের বয়স এবং
প্রয়োজন অনুসারে কার কতটুকু খাওয়া লাগবে এর ওপরে নির্ভর করেই এটি সেবন করতে
হবে।মরিঙ্গা ট্যাবলেট এর উপকারিতা সম্পর্কে জানার পরে ট্যাবলেট খাওয়ার
নিয়ম এবং বয়স ভেদে এটি আমাদের কোন ডোজে খাওয়া উচিত এটি এখন জানবো
আমরা।
মরিঙ্গা ট্যাবলেট সাধারণত সকালের নাস্তা কিংবা দুপুরের খাবারের পরে খাওয়া
উচিত। তবে এই ট্যাবলেট খাবার ফলে আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে
হবে। আপনি যদি প্রথমবার মরিঙ্গা ট্যাবলেট খান তাহলে শুরুর দিকে এটি কম
মাত্রায় খেতে হবে এবং পরবর্তীতে আস্তে আস্তে এর মাত্রা বাড়াতে
পারেন। তবে শিশু এবং গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া
না খাওয়াই ভালো।
- সাধারণত ৫-১৩ বছর বয়সে কোন ছেলে বা মেয়ে প্রতিদিন ৫০০ মি.গ্রা. একটি মরিঙ্গা ট্যাবলেট খেতে পারবে। এটি খাওয়ার ফলে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং শরীরে বিভিন্ন রকমের পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করবে।
- ১৪-১৮ বছর বয়সের কিশোর কিশোরীদের জন্য ৫০০-১০০০ মি.গ্রা. মরিঙ্গা ট্যাবলেট খাওয়া উচিত।এতে করে শরীরের হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা হবে এবং শরীরের শক্তি ও উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
- প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে যাদের বয়স ২০-৫০ বছরের মধ্যে তারা দিনে ২-৩ টি মরিঙ্গা ট্যাবলেট সেবন করতে পারেন। যার ফলে এটি আপনার শরীরে ওজন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি শরীরের শক্তি বৃদ্ধি, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে অধিক সহায়ক হবে।
- এছাড়াও যারা বয়স্ক অর্থাৎ যাদের বয়স ৫০ এর বেশি তারা তাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে এবং হাটুর ব্যথা কমানোর জন্য দিনে ১-২ টি মরিঙ্গা ট্যাবলেট খেতে পারেন।
মরিঙ্গা ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয়
আমাদের অনেকের মনে এই প্রশ্ন জাগে মরিঙ্গা ট্যাবলেট খেলে খেলে কি মোটা
হয়ে যায়? এর উত্তর হিসেবে হ্যাঁ এবং না দুইটাই রয়েছে। কেননা
মরিঙ্গা ট্যাবলেট আমাদেরকে সরাসরি ভাবে মোটা করে না, বরং এটি আমাদের শরীরে
পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি আমাদের শরীরের ওজন
বৃদ্ধি করে দেই। চলুন বিষয়টি আরো সুন্দরভাবে ক্লিয়ার করা যাক।
আমরা যদি নিয়মিত এবং সঠিক নিয়ম ও মাত্রা অনুসরণ করে মরিঙ্গা ট্যাবলেট খায়
তাহলে এটি আমাদের শরীরের ওজনকে নিয়ন্ত্রিত রাখে। যার ফলে মোটা হওয়ার কোন
সম্ভাবনা থাকে না। কিন্তু আমরা যদি এই ট্যাবলেট বেশি পরিমাণে খাই এবং অধিক
ক্যালরি সম্পন্ন খাবারের সাথে গ্রহণ করে তাহলে এটি আমাদের শরীরকে মোটা বানিয়ে
দিতে পারে।
মরিঙ্গা ট্যাবলেট কিভাবে খেলে মোটা হয়
আপনি যদি আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে চান কিংবা বর্তমান অবস্থার চেয়ে
আরেকটু মোটা হতে চান তাহলে মরিঙ্গা ট্যাবলেট খাবার বেশ কিছু নিয়ম
রয়েছে যেগুলো ফলো করলে আপনার শরীরে এ সকল কার্যকারিতা দেখা
দিবে। চলুন জেনে নেই মরিঙ্গা ট্যাবলেট কিভাবে এবং কোন নিয়মে খেলে
আমাদের শরীরে ওজন বৃদ্ধি পাবে এবং মোটা হওয়া যাবে।
- মরিঙ্গা ট্যাবলেট খাবার পরে আপনাকে অন্যান্য খাবার বেশি পরিমাণে খেতে হবে। কেননা মরিঙ্গা ট্যাবলেট যেহেতু আমাদের শরীরের হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে সেহেতু আপনার ক্ষুধা লাগার সম্ভাবনা থাকে।
- অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার যেমন দুধ, কলা বা বাদাম ইত্যাদির সাথে মরিঙ্গা ট্যাবলেট খেতে পারেন। কেননা এ সকল অধিক ক্যালরি সম্পন্ন খাবারের সাথে এই ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়।
- আপনার শরীরে যদি পুষ্টিজনিত সমস্যা থাকে উন্নত মানের খাবারের সাথে মরিঙ্গা ট্যাবলেট মিশিয়ে খেয়ে নিন। এতে করে এটি আপনার শরীরে ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে। তার জন্য প্রতিদিন সকালে এবং রাতে আপনাকে ২-৩ টি ট্যাবলেট খেতে হবে।
মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম
মরিঙ্গা ট্যাবলেট ও মরিঙ্গা পাউডার অত্যাধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সুপারফুড এটা
আমরা সকলেই জেনে গেছি। কেননা উপরে মরিঙ্গা ট্যাবলেট এর উপকারিতা এবং
খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমরা খুব ভালোভাবে জেনেছি। কিন্তু মরিঙ্গা পাউডার
কিভাবে খেতে হয় এটা কি আমরা জানি? মরিঙ্গা ট্যাবলেট ও মরিঙ্গা পাউডার
খাওয়ার নিয়ম কিছুটা আলাদা। চলুন নিচে পাওডার খাওয়ার নিয়ম জেনে
নিই।
- এক গ্লাস হালকা গরম পানির সাথে এক চামচ মরিঙ্গা পাউডার মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে পারেন। কেননা এভাবে খাওয়ার ফলে এটি আমাদের শরীরে সারাদিন শক্তি যোগাবে। পাশাপাশি আমাদের শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে শরীরকে পরিষ্কার রাখে।
- প্রতিদিন এক চামচ মরিঙ্গা পাউডার এর সাথে এক গ্লাস লেবু পানি এবং কিছু মধু মিশিয়ে খাবারের পূর্ব মুহূর্তে খাওয়া যেতে পারে। এভাবে খাবার ফলে এটি যেমন আমাদের শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে ঠিক তেমনি আমাদের ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি করে থাকে।
- হালকা গরম দুধ এবং মধুর সাথে এক চামচ মরিঙ্গা পাউডার মিশিয়ে দিনের যেকোনো সময় খাওয়া যেতে পারে। এর ফলে এটি আমাদের শরীরের শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে অধিক কার্যকরী।
- খাবারের স্বাদ বাড়াতে এবং অতিরিক্ত পরিমাণে ভিটামিন পেতে এক চামচ মরিঙ্গা পাউডার তরকারির উপরে কিংবা খাবার সালাতের উপরে ছিটিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
- অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় আমরা বিভিন্ন রকমের মানসিক চাপে থাকি এবং রাতে ঠিকমতো ঘুম হয় না। সেক্ষেত্রে এক কাপ গরম পানিতে এক চামচ মরিঙ্গা পাউডার মিশিয়ে চা হিসেবে খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।
মরিঙ্গা ট্যাবলেট এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
আমাদের শরীরে মরিঙ্গা ট্যাবলেট কেমন অত্যাধিক কার্যকরী ঠিক তেমনি এটি অতিরিক্ত
ব্যবহার আমাদের শরীরে বিভিন্ন ক্ষতি সাধন করতে পারে। অর্থাৎ এটি
অতিরিক্ত এবং ভুলভাল সেবনের ফলে এর পার্থক্যতিক্রিয়া দেখা দিতে
পারে। মরিঙ্গা ট্যাবলেট এর উপকারিতা আমরা জেনেছি, তবে এখন আমরা জানবো
মনিন্দ্রা ট্যাবলেট পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে।
- অতিরিক্ত মরিঙ্গা ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে এটি আমাদের পেটে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, পেট ব্যথা, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
- এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার ফলে অতিরিক্ত খাওয়াতে আমাদের পেটে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- বোরিঙ্গা ট্যাবলেট যেহেতু উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে তাই আমাদের মধ্যে যাদের লো প্রেসার রয়েছে তাদের জন্য এটি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
- বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য মরিঙ্গা ট্যাবলেট এক অন্যরকম সমস্যা সৃষ্টি করে থাকে। কেননা এটি গর্ভবতী মহিলাদের জরায়ুর সংকোচন ঘটিয়ে গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
- যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে তাদের জন্য মরিঙ্গা ট্যাবলেট বিশেষ উপকারী। কেননা এটি আমাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমায়। তবে ডায়াবেটিস ওষুধের সাথে যদি এটি খাওয়া হয় তাহলে রক্তে সরকারের মাত্রা অধিক পরিমাণে কমে গিয়ে আমাদের শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
- অতিরিক্ত মরিঙ্গা ট্যাবলেট খেলে এটি আমাদের কিডনি ও লিভারের উপরে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে থাকে। মূলত এই মরিঙ্গা ট্যাবলেট লিভারের কার্যকারিতা পরিবর্তন করে দেয় এবং কিডনিতে পাথরের সৃষ্টি করতে পারে। তাই আমাদের সতর্ক থাকা উচিত।
- ট্যাবলেট এমন একটি জিনিস যেটা প্রথমবার খাবার ফলে বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা কিংবা শরীর দুর্বল হয়ে যেতে পারে। তাই শুরুর দিকে এটি খাবারের পর খাওয়া উত্তম হবে।
আমাদের মন্তব্য
আজকের আর্টিকেল থেকে আপনি জানলেন মরিঙ্গা ট্যাবলেট এর উপকারিতা এবং খাওয়ার
নিয়ম সম্পর্কে। পাশাপাশি মরিঙ্গা পাউডার কিভাবে খেতে হয়, মরিঙ্গার
ট্যাবলেট খেলে আমরা মোটা হয়ে যাই কিনা এবং ঘরোয়া ভাবে মরিঙ্গা ট্যাবলেট
তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জেনেছি যেটা আমাদের জন্য অনেক কার্যকরী
হবে বলে মনে করি। তাই আজকের এই আর্টিকেল
আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে যদি আপনি এর সঠিক ব্যবহার করতে পারেন।
অন্যথায় এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে। আপনি যদি এই ধরনের
গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল আরো পেতে চান তাহলে নিয়মিত আমাদের এই
ওয়েবসাইটের সাথে
থাকুন। এখানে আপনি এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল প্রতিনিয়ত পেয়ে
যাবেন।
হ্যাপিনেস ভ্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url