ইসলামী ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় -৫ টি কার্যকারী উপায়

আমরা অনেকেই রয়েছি যারা বিশেষ প্রয়োজনে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোন নিতে চায়। আপনি যদি ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান এবং ইসলামী ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে চান তবে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই।  
ইসলামী-ব্যাংকে-লোন-পাওয়ার-৫ টি-গুরুত্বপূর্ণ-উপায়
ইসলামী ব্যাংক মূলত বিভিন্ন পদ্ধতিতে সুদমুক্ত লোন দিয়ে থাকে। সেই দিক বিবেচনা করে ইসলামী ব্যাংক থেকে লোনের জন্য ৫ টি কার্যকরী উপায় যদি আপনি জানেন তবে আপনার লোন পাওয়া খুবই সহজ হবে। ইসলামী ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় জানতে নিচে বিস্তারিত পড়ুন।   

পোস্ট সূচিপত্রঃ ইসলামী ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায়

ইসলামী ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায়

ইসলামী ব্যাংক সুদবিহীন লোন প্রদান করে এটা আমাদের প্রায় সকলেরই জানা। তাই বলা যায় এই ব্যাংক অন্যান্য সকল ব্যাংক থেকে আলাদা। আর এই ব্যাংক থেকে যদি আমরা লোন সুবিধা পেতে চাই তবে আমাদের বিশেষ ৫ টি কার্যকরী উপায় সম্পর্কে জানতে হবে। যে উপায় গুলো ফলো করলে এই ব্যাংক থেকে সুদমুক্ত লোন পাওয়া আমাদের জন্য সহজ হবে। চলুন ইসলামী ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় গুলো জেনে নিই। 

  1. চাহিদা অনুযায়ী উপযুক্ত ও সঠিক পদ্ধতি নির্বাচন করা। 
  2. ব্যাংকের সমস্ত শর্ত সম্পর্কে জানা এবং তা মেনে চলা।
  3. লোনের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত কাগজপত্র সময় মতো জমা দেওয়া।
  4. ব্যাংকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা।
  5. আবেদন জমা দেওয়ার পরে নিয়মিত ফলো করা। 

1. যেহেতু ইসলামী ব্যাংকে সুদ মুক্ত লোনের ব্যবস্থা রয়েছে সেক্ষেত্রে আপনাকে শুরুতে নির্বাচন করতে হবে যে আপনি কোন পদ্ধতিতে ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান। আপনার চাহিদার দিকে লক্ষ্য করে আপনি যদি নির্দিষ্ট একটি পদ্ধতি বেছে নেন তবে সেক্ষেত্রে আপনার ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আপনার বোঝার সুবিধার্থে সেই পদ্ধতিগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো। 

  • ইজারাঃ এই পদ্ধতিতে ব্যাংক আপনার জন্য গাড়ি বাড়ি ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি কিনে সেটা ভাড়ায় রাখবে এবং নির্দিষ্ট সময় পর পর মালিকানা চেঞ্জ করবে। 
  • মুরাবাহাঃ এই পদ্ধতিতে মূলত ব্যাংক আপনার জন্য বিভিন্ন রকমের পণ্য অথবা সম্পদ কিনে নির্দিষ্ট লাভে বিক্রয় করে দেবে। 
  • কার্ড ভিত্তিক সুবিধাঃ এর মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ইসলামী ব্যাংক থেকে বিশেষ সুবিধা পাবেন। 
  • মুশারাকাঃ এই পদ্ধতিতে ব্যাংক আপনার সমান ভাগিদার হবে। অর্থাৎ কোন পণ্যে লাভ বা লস যাই হোক সমান সমান ভাগ হবে। 
2. আপনি যদি ইসলামী ব্যাংক থেকে সহজে লোন নিতে চান তবে ব্যাংকের যাবতীয় শর্ত সম্পর্কে আপনার ভালোভাবে জানতে হবে। যেমন ধরুন লোন নেওয়ার জন্য আপনার বৈধ ইনকামের কোন পথ থাকা লাগবে। পাশাপাশি আপনি পূর্বে কোন ব্যাংক থেকে লোন নিয়েছেন কিনা সেই তথ্য দিতে হবে। আবার বিশেষ প্রয়োজনে আপনার জামানতের প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। এ সমস্ত দিক ঠিক থাকলে আপনার লোন পাওয়া সহজ হবে। 

3. ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য অবশ্যই আপনার প্রয়োজনে কাগজপত্র পূর্বে থেকে প্রস্তুত রাখা লাগবে। যেটা আপনার সহজে লোন পাওয়ার জন্য একটি বিশেষ উপায় হয়ে দাঁড়াবে। প্রয়োজনীয় কাগুসমূহ যেমন জাতীয় পরিচয় পত্র, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, চাকরিজীবী হলে চাকরির সনদপত্র, ব্যবসার জন্য নিলে ট্রেড লাইসেন্স, ট্যাক্স আইডি এবং ব্যবসায়ী অনুমোদিত কাগজপত্র প্রয়োজন হতে পারে। 

4. ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার সবচেয়ে বেশি কার্যকরী উপায় হচ্ছে ব্যাংকের কর্মকর্তার সাথে গিয়ে সরাসরি কথা বলা। এর ফলে আপনি সেখানে স্পষ্টভাবে তাদের শর্তা ও নীতিমালা সম্পর্কে জানতে পারবেন। পাশাপাশি আপনার ব্যবহার যদি উত্তম হয় তবে আপনি তাদের কাছে বিশ্বস্ত হবেন এবং ব্যাংকের সাথে একটি ভালো সম্পর্ক তৈরি হবে। যার ফলে আপনি খুব সহজে লোন সুবিধা পাবেন।

5. যখন আপনি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য আবেদন করবেন, আবেদন জমা দেওয়া হয়ে গেলে প্রতিনিয়ত আবেদনের স্ট্যাটাস চেক করুন। আরো যদি কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় তবে দ্রুত জমা দিয়ে দিন। এছাড়াও আপনার কাছে যদি কোন তথ্য চাওয়া হয় তবে অবশ্যই সঠিক তথ্য দিবেন। এভাবে যদি নিয়মিত খোঁজ রাখেন বা ফলো করেন তবে খুব তাড়াতাড়ি ব্যাংক থেকে লোন পেতে পারেন। 

ইসলামী ব্যাংক লোনের বিশেষ সুবিধা

আমাদের অনেকের মনে এই প্রশ্ন আসতে পারে, ইসলামী ব্যাংকে লোন জন্য কী সুবিধা রয়েছে? হ্যাঁ। ইসলামী ব্যাংকে লোন নেওয়ার জন্য বিশেষ কিছু সুবিধা রয়েছে যেটা অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় বেশি। আর আপনি যদি কোন কারনে ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান তবে এই সকল সুবিধা সমূহ আপনার জানা উচিত। তাহলে চলুন জেনে নেই ইসলামী ব্যাংক লোনের জন্য বিশেষ কি কি সুবিধা রয়েছে। 
ইসলামী-ব্যাংকে-লোন-পাওয়ার-৫ টি-গুরুত্বপূর্ণ-উপায়
প্রথমত, ইসলামী শরীয়তের ভিত্তিতে ইসলামী ব্যাংক সুদমুক্ত লোন প্রদান করে থাকে। এর ফলে আমরা যদি এখান থেকে লোন নিই তবে সুদের বোঝা থেকে আমরা মুক্ত থাকতে পারবো। এছাড়াও ইসলামী ব্যাংক যেহেতু ইসলামের শরীয়ত মেনে লোন দেয় সেক্ষেত্রে আমরা কেউ যদি বাড়ি করার জন্য লোন নিই, তবে আমাদের বাড়ি নির্মাণ করার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত সামগ্রী এই ব্যাংক সরবরাহ করে দেয়।

দ্বিতীয়ত, ইসলামী ব্যাংক লোন প্রদানের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ফি গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে। যার ফলে আমরা যদি কেউ ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নিই ন্যায্য চুক্তি করে লোন নিতে পারবো। ইসলামী ব্যাংকের আরেকটি বিশেষ সুবিধা হচ্ছে এখান থেকে দীর্ঘমেয়াদী লোন নেওয়া যায়। যেমন আপনি যদি বাড়ি করার জন্য লোন নেন তবে সর্বোচ্চ ১৫ বছর ধরে লোন পরিষদ করতে পারবেন।  

ইসলামী ব্যাংক বনাম অন্যান্য ব্যাংকের পার্থক্য

ইসলামী ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংকের মধ্যে কি পার্থক্য রয়েছে? হ্যাঁ ইসলামী ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংকের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। কেননা ইসলামী ব্যাংক ইসলামী শরীয়তের ভিত্তিতে লোন দিয়ে থাকে কিন্তু অন্যান্য ব্যাংকগুলো সুদভিত্তিক লোন ব্যবস্থা অনুসরণ করে চলে। এতটুকুর মধ্যেই এটি সীমাবদ্ধ নয়। চলুন পরিষ্কারভাবে জেনে নিই ইসলামী ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংকের মধ্যে কি পার্থক্য রয়েছে। 

  • ইসলামী ব্যাংকে সুদ পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কিন্তু অপরদিকে অন্যান্য ব্যাংকগুলো সুদের মাধ্যমেই ব্যাংক পরিচালিত করে। 
  • আমরা খেয়াল করলে বুঝতে পারবো ইসলামী ব্যাংক লাভ ও ক্ষতি ভাগাভাগির ভিত্তিতে লোন দিয়ে থাকে। কিন্তু অন্যান্য ব্যাংকগুলো সুদের ওপর ভিত্তি করে লোন দিয়ে থাকে। 
  • আমাদের মধ্যে যদি কেউ ইসলামী ব্যাংক থেকে ব্যবসার জন্য টাকা লোন নেই সেক্ষেত্রে লাভ ও ক্ষতির অংশীদার ব্যাংক এবং গ্রাহক দুজনেই হবে। অপরদিকে অন্যান্য ব্যাংকগুলো থেকে লোন দেওয়া হলে লাভ ও ক্ষতি পুরোটাই গ্রাহকের ওপর পড়বে। 
  • ইসলামী ব্যাংক মূলত হালাল সবকিছুর জন্য লোন প্রদান করে। অপরদিকে অন্যান্য ব্যাংকগুলো থেকে লোন নিয়ে হারাম কাজের সেটা লাগানো যায়। সেক্ষেত্রে অন্যান্য ব্যাংকের কোন বাধা ধরা নেই। 
  • ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু চুক্তির মাধ্যমে লোন সহজে দেওয়া যায়।অপরদিকে অন্যান্য ব্যাংক গুলোতে সুদভিত্তিক চুক্তি সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। 
  • ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ দেওয়ার পরে সে ঋণ পরিশোধ করতে যদি দেরি হয় তবে অতিরিক্ত চার্জ নেয় না। শুধুমাত্র আমাদের কাছ থেকে প্রশাসনিক খরচ নেবে। কিন্তু অপরদিকে অন্যান্য ব্যাংক থেকে যদি আমরা লোন নিই তবে পরিশোধ করতে দেরি হলে সুদের হার বাড়তে থাকে। 

এবার তাহলে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন ইসলামী ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংকের মধ্যে কতটা পার্থক্য রয়েছে। তাই আমাদের লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়াই উত্তম হবে বলে মনে করি। 

ইসলামী ব্যাংকে জামানত ছাড়া লোন পাওয়ার উপায়

প্রায় প্রতিটি ব্যাংকে লোন নিতে হলে জামানত হিসেবে বাড়ির দলিল কিংবা দামি কিছু ব্যাংকে জমা দিতে হয়। সে দিক থেকে ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নিতে হলেও জামানতের প্রয়োজন। তবে বিশেষ কিছু উপায় রয়েছে যে উপায়গুলো মেনে নিলে লোন নেওয়ার জন্য জামানত দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে চলুন জেনে নিই ইসলামিক ব্যাংক থেকে কোন উপায়ে জামানত ছাড়া লোন পাওয়া সম্ভব। 
ইসলামী-ব্যাংকে-লোন-পাওয়ার-৫ টি-গুরুত্বপূর্ণ-উপায়
মুরাবাহা ভিত্তিক লোনঃ এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে আপনি জামানত ছাড়া লোন পাবেন। কারণ আপনি যদি ব্যবসা করার জন্য ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেন তবে আপনার ব্যবসার জন্য যত কিছু প্রয়োজন হবে এসব কিছু ইসলামী ব্যাংক আপনাকে কিনে দেবে। এরপরে ধীরে ধীরে আপনি কিস্তির মাধ্যমে সেই লোন পরিশোধ করতে পারবেন। যার জন্য আপনাকে কোন জামানত দিতে হবে না। 

ইজারা ভিত্তিক লোনঃ ধরুন আপনি আপনার পছন্দের কোন গাড়ি কিনতে চান। তার জন্য আপনার কাছে নির্দিষ্ট পরিমাণে টাকা নেই। সেক্ষেত্রে আপনি যদি ইসলামী ব্যাংক থেকে এই গাড়ি কেনার জন্য টাকা নেন তবে ব্যাংক আপনাকে আপনার পছন্দের গাড়ি কিনে দেবে। এর পরবর্তীতে আপনি আস্তে আস্তে কিস্তের মাধ্যমে সেই লোন পরিশোধ করতে পারবেন। এটাই মূলত ইজারা ভিত্তিক লোন যার জন্য কোন জামানত দিতে হবে না। 

মুশারাকা ভিত্তিক লোনঃ এই লোন নিতে ব্যাংকের সাথে ভাগীদার হওয়া লাগে। অর্থাৎ আপনি যদি কোন ব্যবসা অথবা অনলাইনে কোন কাজ করতে চান তবে সে কাজের জন্য আপনার যত টাকা প্রয়োজন হবে সব টাকা ব্যাংক দেবে। পরবর্তীতে সেই ব্যবসা বা কাছ থেকে যদি আপনার লাভ অথবা লস হয় তবে সেটার টাকা ব্যাংকের সাথে সবার ভাগ হবে। এককথায় ব্যাংক আপনাকে পার্টনার হিসেবে লোন দিবে। 

মুদারাবা ভিত্তিক লোনঃ আপনি কোন বিষয় যেমন ফ্রিল্যান্সিং বা আইটি বিষয়ক দক্ষতাকে কাজে লাগাতে চান। কিন্তু টাকার অভাবে একটি ভালো ল্যাপটপ এবং স্মার্টফোন কিনতে পারছেন না।সেক্ষেত্রে ব্যাংক আপনাকে এ সমস্ত কিছু কিনে দেবে। শুধুমাত্র পরবর্তীতে যদি আপনার ইনকাম হয় তবে সেই ইনকাম থেকে ব্যাংকে একটি অংশ দিতে হবে। যার জন্য কোন রকমের জামানত প্রয়োজন নেই। 

ইসলামী ব্যাংক হোম লোন আবেদন 

আমরা অনেকেই রয়েছে যারা বাড়ি করার জন্য কিংবা কেনার জন্য বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে থাকি। কিন্তু সেই লোন নেওয়ার জন্য কিভাবে কি করতে হয় এটা না জানার ফলে গুগলে এসে খুঁজে থাকি। আর আপনিও যদি তার মধ্যে একজন হোন তবে এখন হোম লোন পদ্ধতি সুন্দরভাবে জেনে নিন। আমি আশা করি আপনি ইতোমধ্যে ইসলামী ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জেনেছেন। 

ইসলামী ব্যাংক থেকে হোম লোনের জন্য কোন রকমের জামানত দেওয়ার প্রয়োজন হয় না এটা আমাদের প্রায় সকলেরই জানা। তবে হোম লোনের জন্য কিভাবে আবেদন করতে হয় এবং কি কি প্রয়োজন এসব কিছু আমাদের জানা উচিত।  

  • শুরুতে আপনাকে ইসলামী ব্যাংকের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অথবা সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে হোম লোনের যাবতীয় শর্তাবলী সম্পর্কে জানতে হবে। 
  • এরপরে ব্যাংকের শাখা অথবা ওয়েবসাইট থেকে ইসলামী ব্যাংক লোন আবেদন ফরম পূরণ করুন। 
  • ব্যাংক লোন আবেদনের ফরম পূরণ করার জন্য আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা পাসপোর্ট প্রয়োজন। এছাড়াও দুই কপি ছবি এবং টিআইএন সার্টিফিকেটের ফটোকপি লাগবে। 
  • আপনি যদি চাকরিজীবী হন তবে আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং বেতন স্লিপ এর প্রমাণপত্র প্রয়োজন।
  • অবশেষে আপনার আবেদন ফরম সঠিকভাবে পূরণ করা হয়ে গেলে ব্যাংকের শাখায় যাওয়ার দিতে হবে। 
  • এরপরে ব্যাংক যাচাই-বাছাই করে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনাকে হোম লোন দিবে।  

ইসলামী ব্যাংক ব্যবসা-বাণিজ্য লোন পদ্ধতি

ইসলামী ব্যাংক থেকে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে লোন দেওয়ার জন্য বিশেষ কিছু পদ্ধতি রয়েছে। আপনি যদি বিভিন্ন রকমের ব্যবসা করার জন্য ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান তবে এ সমস্ত পদ্ধতি গুলো আপনার জানা প্রয়োজন। ইসলামী ব্যাংক থেকে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য লোন দেওয়ার পদ্ধতি জানতে বিস্তারিত পড়ুন। 

আপনি যদি ব্যবসার জন্য ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান তবে জামানত ছাড়াই মুদারাবা অর্থাৎ মুনাফা ভিত্তিক পদ্ধতিতে লোন নিতে পারবেন। বিষয়টি আরো ক্লিয়ার করা যাক।ব্যবসার জন্য ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নিলে যাবতীয় খরচ আপনাকে ব্যাংক দেবে। এর পরিবর্তে ব্যাংক আপনার পার্টনার হিসেবে থাকবে। এর ফলে ব্যবসায় লাভ লস যা হবে ব্যাংক এবং আপনার সমান ভাবে সেটা ভাগ হবে। 

এছাড়াও আপনার প্রতি নির্দিষ্ট কোন ব্যবসা থাকে এবং সেই ব্যবসার উন্নতির জন্য ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান সে ক্ষেত্রে ব্যাংক আপনাকে লোন দিবে। কিন্তু একটি নির্দিষ্ট সময় পরে ব্যাংকের সাথে চুক্তি অনুযায়ী আপনাকে সেই ব্যবসার পণ্য সরবরাহ করে দিতে হবে। বিশেষ করে কৃষি, শিল্প, ইম্পোর্ট ও এক্সপোর্ট ইত্যাদি এই পণ্যের অন্তর্ভুক্ত। 

ইসলামী ব্যাংক লোন আবেদন ফরম পূরণ

ইসলামী ব্যাংকে লোন আবেদনের জন্য নির্দিষ্ট একটি ফরম পূরণ করতে হয়। আর সেই ফরম পূরণ করার সম্পূর্ণ প্রসেস ভালোভাবে জানতে নিচের বিস্তারিত পড়ুন। 
ইসলামী-ব্যাংকে-লোন-পাওয়ার-৫ টি-গুরুত্বপূর্ণ-উপায়
  • প্রথমত ব্যাংকের শাখায় কিংবা ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রয়োজন অনুসারে আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে। যেমন ব্যবসার জন্য মুদারাবা ও মুসারাকা, বাড়ির জন্য ইজারা ও গাড়ির জন্য ইজারা ও মুরাহাবা ফরম সংগ্রহ করুন। 
  • ফরম সংগ্রহ করা হয়ে গেলে আপনার কিছু ব্যক্তিগত তথ্য অথবা প্রমাণপত্র প্রয়োজন। যেমন আপনার সঠিক এবং পূর্ণ নাম, আপনার পিতা এবং মাতার নাম, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, জন্ম তারিখ ও জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর এবং পাসপোর্ট, মোবাইল ও ইমেইল নাম্বার দিতে হবে।  
  • লোন আবেদনের ফরম পূরণ করার সময় অবশ্যই আপনার ইনকাম সোর্সের প্রমাণ লাগবে। আপনি যদি ব্যবসায়ী হন তবে ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স, চাকরিজীবী হলে কোম্পানির নাম, পদবি ও বেতন সম্পর্কিত তথ্য, ফ্রিল্যান্সার হলে ব্যাংক স্টেটমেন্ট দিতে হবে। 
  • এরপরে আপনি কোন কাজের জন্য লোন দিতে চাচ্ছেন, কত টাকা লোন নিতে চাচ্ছেন, কত বছরের জন্য লোন নিতে চাচ্ছেন এবং প্রতি মাসে কত টাকা করে কিস্তি দেবেন এ সমস্ত তথ্য আপনাকে দিতে হবে। 
  • আপনার ফরমটি পূরণ করা হয়ে গেলে সেটি ভালোভাবে চেক করুন এবং জমা দিন। 
  • এরপরে ব্যাংক আপনার ফরমটি ভালোভাবে যাচাই করে কয়েক সপ্তাহ পরে জানাবে। অতিরিক্ত কোন কাগজ প্রয়োজন হলে শীঘ্রই জমা দেওয়ার চেষ্টা করুন। 

লোন আবেদন বাতিল হলে কি করনীয়

আপনি লোন নেওয়ার জন্য ইসলামী ব্যাংকে আবেদন জমা দিলেন কিন্তু কোন কারণে আপনার লোন আবেদন বাতিল হয়ে গেল।সে ক্ষেত্রে আপনার কি কোন করনীয় আছে? হ্যাঁ অবশ্যই আছে। কোন কারণবশত যদি আপনার লোন বাতিল হয়ে যায় তবে কেন লোন বাতিল হলো সে কারণটি আগে খুঁজে বের করুন। লোন বাতিল হয় মূলত কোন তথ্যে ভুল থাকলে কিংবা কোন কাগজপত্রে কমতি পড়লে। 

লোন বাতিল হওয়ার বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে হলো, আপনার কম উপার্জন, ব্যবসার ক্ষেত্রে বৈধ কাগজপত্র না থাকলে, ব্যাংক স্টেটমেন্ট দুর্বল হলে, পূরণ করা ফরমে ভুল তথ্য থাকলে কিংবা পূর্বের ঋণের খারাপ রেকর্ড ও ব্যাংকের নীতিমালার পরিবর্তন ঘটলে লোন বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই লোন বাতিল হলে আগে কারণটা খুঁজে বের করুন। এরপর 

সেই ভুলটি সংশোধন করে এবং আরো বেশ কিছু তথ্য অথবা গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণপত্র যোগ করে পুনরায় আবেদন করুন। পুনরায় আবেদন করার জন্য অবশ্যই সঠিক এবং বৈধ কাগজপত্র ব্যবহার করতে হবে। ব্যবসার ক্ষেত্রে যদি আপনার ট্রেড লাইসেন্সের সমস্যা থাকে তবে সেটা আপডেট করে পুনরায় ব্যাংক আবেদন ফর্মে যুক্ত করুন। লোন আবেদন বাতিল হলে আপনি এভাবে সংশোধন করে নিতে পারেন। 

ইসলামী ব্যাংক লোন পরিশোধের উপায়

ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার পরে কোন এক নির্দিষ্ট সময়ে সেই লোন পুনরায় পরিষদ করতে হবে। আর এর মাঝে যদি একটা লোন পরিশোধ করতে সমস্যা হয় তবে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। 
ইসলামী-ব্যাংকে-লোন-পাওয়ার-৫ টি-গুরুত্বপূর্ণ-উপায়
তাই আপনাকে পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।আর আপনার সুবিধার্থে এখন আপনাকে জানাবো ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে কোন উপায়ে সেটি পরিশোধ করলে আপনার জন্য সহজ হবে। 

  • প্রতি মাসে একটি নির্ধারিত পরিমাণ টাকা কিস্তি হিসেবে জমা দিন। আর এই কিস্তি দিতে যদি দেরি করেন তবে ইসলামী ব্যাংক থেকে মুনাফা কাটতে পারে। তাই সতর্ক থাকতে হবে। 
  • সব সময়ের জন্য আপনার ব্যাংক একাউন্টে অধিক পরিমাণে টাকা জমা রাখুন জেনো সময় মতো নির্ধারিত দিনে ব্যাংকে জমা দিতে পারেন। 
  • আপনার কাছে যখনই টাকা হবে তখনই আপনার কাছের ইসলামী ব্যাংকের শাখায় গিয়ে সেই টাকা জমা দিন এবং রশিদ সংগ্রহ করুন। এতে করে আপনার চাপ কমবে। 
  • এছাড়া আপনি ঘরে বসে মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে লোন পরিশোধ করতে পারেন। এর ফলে আপনি আপনার মন মত টাকা জমা দিতে পারবেন। মোবাইল অ্যাপটি হলো iBanking ।
  • অধিক পরিমাণে চাপ কমাতে এবং সহজে লোন পরিশোধ করার জন্য আপনি পূর্বে থেকে ব্যাংককে অনুমতি দিতে পারেন যেন আপনার একাউন্ট থেকে কিস্তির টাকাটা নিয়ে নেয়। 
  • এছাড়াও ভবিষ্যতে ব্যাংকের লোন পরিশোধ করার জন্য বিকাশ, নগদ এবং রকেট অ্যাপ ব্যবহৃত হতে পারে। যেটা আমাদের সহজে লোন পরিশোধ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।  

আমাদের মন্তব্য

ইসলামী ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে আপনি ইতোমধ্যে অনেক ভালোভাবে জেনে গেছেন। পাশাপাশি এটা জেনেছেন ইসলামী ব্যাংক থেকে কোন কোন উপায়ে লোন নেওয়া যায়, কিভাবে জামানত ছাড়া লোন পাওয়া সম্ভব, লোন নেওয়ার জন্য কিভাবে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে এবং কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন এ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জেনেছেন। আমরা আশা করি

কখনো কোন প্রয়োজনে ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে উপরোক্ত বিষয়গুলো আপনার জন্য অধিক কার্যকরী হবে।আপনি যদি নিয়মিত এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে চান তবে এই ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। আমাদের এই ওয়েবসাইটে নিয়মিত এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

হ্যাপিনেস ভ্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url