ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করার সহজ কিছু টিপস
আপনি কি আপনার ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করার সহজ কিছু টিপস সম্পর্কে জানতে চান? তবে আজকের এই আর্টিকেল আপনার জন্যই। কেননা আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি সহজে কিভাবে ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করা যায়।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম একটি অংশ হলো উজ্জ্বল ত্বক। আর এই উজ্জ্বল ত্বকের যত্নের অভাবে ত্বকের মধ্যে কেমন জানি একটি খসখসে ভাব চলে আসে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক খসখসে ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করার সহজ কিছু টিপস।
পোস্ট সূচীপত্রঃ ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করার সহজ কিছু টিপস
- ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করার সহজ কিছু টিপস
- প্রতিদিন যেভাবে ত্বকের যত্ন নিতে হবে
- সকালে ত্বকের যত্ন নিলে কি হয়
- ঘুমানোর পূর্বে যেভাবে ত্বকের যত্ন নিতে হয়
- ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করতে যেসব খাদ্য কার্যকরী
- ত্বকের যত্নে সঠিক ক্রিম ব্যবহার
- ত্বক উজ্জ্বল রাখতে যেসব বিষয় এড়িয়ে চলতে হবে
- যেসব পানীয় পান করলে ত্বক মসৃণ হয়
- উজ্জলতা বাড়াতে যেসব ভিটামিন ব্যবহার করা উচিত
- সবশেষে আমাদের কিছু কথা
ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃন করার সহজ কিছু টিপস
আমাদের ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করার জন্য সবচেয়ে সহজ ও ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো মেনে চলা খুবই কার্যকারী। বিশেষ করে প্রায় সবসময় মুখ পরিস্কার রাখা, পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করা সাথে ত্বকের যত্ন নেওয়া আমাদের কর্তব্য এবং এটা আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্পুর্ণ। বিশেষ করে আমাদের ত্বক হাইড্রেটেড রাখতে দিনে কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উত্তম। তো চলুন জেনে নিই যে কিভাবে আমাদের ত্বক খুব সহজে উজ্জ্বল ও মসৃন করা সম্ভব।
প্রথমত, সকালে এবং রাতে ক্লিনজার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করবেন। কেননা এটি দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করার ফলে আপনার ত্বকের ময়লা দূর হবে এবং ত্বক অনেকটা উজ্জ্বল দেখাবে। তবে আপনি যদি আপনার ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বাড়াতে চান, অবশ্যই প্রাকৃতিক উপাদানগুলো ব্যবহার করা আপনার জন্য বিশেষ কার্যকরী হবে। যেমন ধরুন আপনি যদি মধু এবং লেবুর রস এক সাথে মিশিয়ে একটা ফেসপ্যাক তৈরি করেন তবে এটা আপনার ত্বকে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা এনে দিবে।
দ্বিতীয়ত, আপনার ত্বকে আপনি সরাসরি অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন। কেননা এটি আপনার ত্বককে উজ্জ্বল এবং মসৃন করতে অনেক বেশি কার্যকরী। তবে একটা বিষয় আপনাকে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে যে, আপনার সুন্দর ত্বকের জন্য সঠিক জীবনধারা বজায় রাখা আপনার জন্য অপরিহার্য। সেক্ষেত্রে আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম, সঠিক খাদ্য গ্রহণ এবং স্ট্রেস মুক্ত থাকার মাধ্যমে আপনার স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারবেন। তাই চেষ্টা করবেন ত্বকের উজ্জ্বলতা ও মসৃণতা ধরে রাখতে দৈনন্দিন এইরকম ছোটখাটো অভ্যাস এর পরিবর্তন করার।
প্রতিদিন যেভাবে ত্বকের যত্ন নিতে হবে
আমাদের ত্বকের সঠিক যত্ন নেওয়া এটি যে শুধুমাত্র আমাদের বাহ্যিক সৌন্দর্যের জন্যই, ঠিক এমনটি নয়। বরং এটি আমাদের শরীর ও স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। কেননা আপনার সুস্থ উজ্জ্বল ও মসৃণ ত্বক আপনার আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করার পাশাপাশি আপনাকে অনেক বেশি প্রাণবন্ত করে তোলে। তবে এর জন্য আপনাকে কখনোই ব্যয়বহুল এবং জটিল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে না। শুধুমাত্র আপনার প্রতিদিনের কিছু সহজ অভ্যাস এবং ঘরোয়া ভাবে যত্নের মাধ্যমেই আপনি আপনার ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা এবং মসৃণতা ধরে রাখতে পারবেন।
ঘরোয়া ভাবে ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করার সহজ কিছু টিপস সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে কিছুটা জেনেছেন। তো চলুন এবার জেনে নিই যে কিভাবে আপনি প্রতিদিন ত্বকের যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে আপনার ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃন করবেন। নিচে আমি সেইগুলো পয়েন্ট আকারে খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করলাম।
১। সকালে মুখ পরিষ্কার করুন
দিনের শুরুতে অর্থাৎ সকালে ঘুম থেকে উঠে আপনি ক্লিনজার অথবা যাবতীয় কিছু ব্যবহার করে মুখটা সুন্দর করে পরিষ্কার করুন। কেননা এটি ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকের ময়লা দূর হয় পাশাপাশি আপনার ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল দূর করতে সাহায্য করে।
২। ময়েশ্চারাইজার এবং সানস্ক্রিন ব্যবহার
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে। তাই আপনার ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। পাশাপাশি রোদের মধ্যে বের হওয়ার আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। এতে করে আপনার ত্বকে রোদ পোড়া ভাব টা আর আসবে না এবং বয়সের দাগ থেকে রক্ষা পাবেন।
৩। রাতে ত্বকের যত্ন নিন
রাতে ঘুমানোর পূর্বে ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম অথবা অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করুন। কেননা এসব প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার এর ফলে আপনার ত্বক পুনর্গঠন ও মসৃণ হয়ে উঠে। যেটা আপনার ত্বক সুন্দর করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপর্ণ ভূমিকা রাখে।
৪। সঠিক খাদ্য গ্রহণ এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম নিশ্চিত করুন
প্রতিদিন বিভিন্ন রকমের তাজা ফল খান। এছাড়াও বিভিন্ন রকমের শাকসবজি এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন। এতে করে আপনার ত্বকের ভেতরের উজ্জ্বলতা বাড়তে থাকবে। এছাড়াও আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। প্রতি রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম আপনার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য অপরিহার্য। তাই অবশ্যই আপনার এই দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।
সকালে ত্বকের যত্ন নিলে কি হয়
সকালে ত্বকের যত্ন নিলে কি হয়? সকালে ত্বকের যত্ন নেওয়ার ফলে কি কোন রকমের ক্ষতি হয়? নাকি সকালে ত্বকের যত্ন নেওয়ার ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়? প্রতিদিন সকালে যদি আপনি ত্বকের যত্ন নেন তবে সেটা আপনার ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য হবে একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কেননা সারারাত আপনার ত্বক পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় থাকে। যার ফলে আপনি যদি সকালে ত্বকের যত্ন নেন তবে আপনার ত্বক সারাদিন সতেজ ও সুরক্ষিত থাকবে। তাহলে বুঝতেই পারছেন সকালে ত্বকের যত্ন নেওয়া আমাদের জন্য কতটা কার্যকরী।
তাহলে চলুন এবার জেনে নিই কিভাবে ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করার সহজ কিছু টিপস এর নিয়ম মেনে ত্বকের যত্ন নিলে আমাদের ত্বক সারাদিন ধরে সতেজ ও সুরক্ষিত থাকবে।
- ত্বক থেকে ময়লা পরিষ্কার এবং রাতের তৈলাক্ত ভাব দূর করার জন্য সকালে উঠেই ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুতে হবে।
- টোনার ব্যবহার করতে হবে যাতে ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্স বজায় থেকে আমাদের ত্বককে সতেজ রাখে।
- ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য এবং ত্বকের শুষ্কতা রোধ করার জন্য সকালে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
- সকালে রোদে কোথাও বের হলে রোদপোড়া এড়াতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
- সকালে খালি পেটে পানি পান করুন। কেননা এটি আপনার ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং ত্বক থেকে টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে।
- সকালে ভিটামিন ও অ্যান্টঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধি ফল এবং খাবার খান। এতে করে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
ঘুমানোর পূর্বে যেভাবে ত্বকের যত্ন নিতে হয়
সারাদিনের ক্লান্তি আর বিভিন্ন রকমের ময়লা ধুলাবালি সহ্য করার পর আমাদের ত্বক একটু বিশ্রাম এবং ক্লান্তির দাবিদার হয়। সেজন্য ঘুমানোর পূর্বে ত্বকের যত্ন নেওয়া আপনার প্রতিদিনের রুটিনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হওয়া উচিত। কেননা আমাদের ত্বকের জন্য রাত হলো পুনর্গঠনের সময়। আর এই সময় যদি আপনার ত্বকের উপর বিভিন্ন রকমের ময়লা, মেকআপ এবং প্রাকৃতিক তেল জমে থাকে তবে সেটা আপনার ত্বকের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক হতে পারে।
তাই ঘুমানোর পূর্বে অবশ্যই আপনার ত্বকের সঠিক যত্ন নিশ্চিত করতে হবে যা আপনার ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করবে। সাথে এই অভ্যাস আপনার ভবিষ্যতের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা এড়াতে অধিক কার্যকরী হবে। তাহলে চলুন এবার আমরা জেনে নিই যে রাতে কিভাবে আমাদের ত্বকের যত্ন নেওয়া উচিত।
- রাতে ঘুমানোর পূর্বে অবশ্যই মেকআপ পরিষ্কার করুন। সেক্ষেত্রে আপনি মেকআপ রিমুভার ব্যবহার করতে পারেন।
- ঘুমানোর পূর্বে মুখের অতিরিক্ত প্রাকৃতিক তেল এবং ময়লা দূর করার জন্য মৃদু ক্লিনজার দিয়ে সুন্দর করে ধুয়ে নিন।
- আপনার ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে একটু মৃদু স্ক্রাব ব্যবহার করুন। এতে করে আপনার ত্বক উজ্জ্বল থাকে।
- ত্বককে সতেজ রাখতে টোনার ব্যবহার করুন। কেননা এটি ব্যবহারে ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক থাকে এবং ত্বককে সতেজ রাখে।
- ত্বকের বিশেষ চাহিদা অনুযায়ী অ্যান্টি-এজিং অথবা সিরাম ব্যবহার করুন।
- চোখের ক্লান্তি দূর করা এবং চোখের বলিরেখা প্রতিরোধ করতে রাতে একটি ভালো মানের আইক্রিম ব্যবহার করুন।
- আপনার ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে এবং ত্বকের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করতে নাইটক্রিম অথবা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
- পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন। এতে করে আপনার ত্বক অনেকটা উজ্জ্বল থাকবে।
ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃন করতে যেসব খাদ্য কার্যকরী
ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃন করার সহজ কিছু টিপস এর মধ্যে এটি একটি। কেননা আপনার ত্বক উজ্জ্বল রাখার জন্য আপনাকে সঠিক খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যদি পুষ্টিকর ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার থাকে তবে এটি সরাসরি আপনার ত্বকের স্বাস্থ্যের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। কিন্তু সেটা কিভাবে? সঠিক খাদ্যাভ্যাস আপনার ত্বকের ভেতরে পুষ্টির যোগান দিয়ে থাকে এবং আপনার ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সহায়তা করে।
আমাদের ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক খাদ্য বেছে নেওয়া আমাদের জন্য খুব সহজ। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক যে আপনার ত্বকের জন্য কোন সব খাবার অধিক কার্যকরী।
১। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলঃ ত্বক উজ্জ্বল রাখার জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল খাওয়া আপনার জন্য অধিক কার্যকরী। যেমন লেবু, কমলা, মালটা ইত্যাদি সকল ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল আপনার ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে এবং ত্বকের কোলাজেন তৈরি বাড়াতে বিশেষ ভাবে সহায়তা করে।
২। বেরি জাতীয় ফল ও টমেটোঃ বিভিন্ন রকমের বেরি জাতীয় ফল যেমন স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি ইত্যাদি জাতীয় ফল খাবার ফলে এটি আপনার ত্বকের বয়সের ছাপ কমিয়ে আনে। সাথে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে থাকে। এছাড়াও টমেটোতে থাকা লাইকোপিন আপনার ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে থাকে।
৩। গাজর ও অ্যাভোকাডোঃ আমাদের ত্বকের মসৃণতা বাড়াতে বিটা-ক্যারোটিন অধিক সাহায্যকারী। আর এই উপাদানটি গাজর এ বিদ্যমান। তাই নিয়মিত গাজর খাবার ফলে এতে থাকা বিটা-ক্যারোটিন আপনার ত্বকের সুরক্ষা দেয় সাথে ত্বককে মসৃণ রাখে। এছাড়াও ভিটামিন ই সমৃদ্ধ অ্যাভোকাডো আপনার ত্বককে হাইড্রেটেড ও কোমল রাখতে সাহায্য করে।
৪। সবুজ শাকসবজিঃ সবুজ শাকসবজি মধ্যে অধিক পরিমাণে আয়রন, পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন এ, ই থাকে যা আমাদের ত্বকের পুষ্টি যোগায়। বিশেষ করে পালং শাক। যেটার পুষ্টি উপাদান আপনার ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
৫। বাদাম ও বীজঃ বিভিন্ন রকমের বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবার যেমন আখরোট, আমন্ড, চিয়া সিড এ বিদ্যমান ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড আপনার ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। যেটা আপনার ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী।
ত্বকের যত্নে সঠিক ক্রিম ব্যবহার
আমাদের ত্বকের যত্নে ক্রিমের সঠিক ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এটি আমাদের ত্বকের স্বাস্থ্যের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। চলুন জেনে নিই আমাদের ত্বকের যত্নে কোনসব ক্রিম ব্যবহার করা উত্তম।
১। ময়েশ্চারাইজার ক্রিম
প্রতিদিন সকালে এবং রাতে মুখ ধোয়ার পরে ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করুন। এতে করে আপনার ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে।
শুষ্ক ত্বকের জন্যঃ Cetaphil Moisturizing cream.
তৈলাক্ত ত্বকের জন্যঃ Neutrogena Hydro Boost Gel-cream.
২। সানস্ক্রিন ক্রিম
বাইরে কোথাও বার হওয়ার আগে রোদপোড়া এড়াতে এসপিএফ ৩০ বা এর বেশি সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। রোদে বের হওয়ার ১৫-২০ মিনিট আগে এটি তোকে লাগান। তার জন্য এসব সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারেন।
- La Roche-Posay Anthelios Sunscreen.
- Neutrogena Ultra Sheer Dry-Touch Sunscreen.
৩। নাইট ক্রিম
রাতে ঘুমানোর পূর্বে নাইট ক্রিম ব্যবহার করুন। কেননা এটা আপনার ত্বকের পুনর্গঠন করতে সাহায্য করে। সেই ক্ষেত্রে আপনি এসব নাইট ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
- Olay Regenerist Night Recovery Cream.
- L'Oreal Paris Revitalift Night Cream.
৪। আইক্রিম
রাতে ঘুমানোর পূর্বে আপনার চোখের নিচের ক্লান্তি এবং বলিরেখা কমাতে আইক্রিম ব্যবহার করুন। এতে করে আপনার চোখ সুস্থ থাকবে। চোখে ঘুমানোর পূর্বে যেসব ক্রিম ব্যবহার করা কার্যকরী তা নিচে দেওয়া হলো।
- The Ordinary Caffeine Solution.
- Kiehl's Creamy Eye Treatment with Avocado.
৫। ব্রণের জন্য বিশেষ ক্রিম
যদি আপনার মুখে ব্রণের সমস্যার থেকে থাকে তবে তার ক্ষেত্রে সালিসাইলিক অ্যাসিড বা বেনজয়েল পারক্সাইডযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করুন। এতে করে আপনার মুখের ব্রণের সমস্যা দূর হবে । সেক্ষেত্রে আপনি যেসব ক্রিম ব্যবহার করবেন তা হলো...
- Clean & Clear Acne Spot Treatment.
- La Roche-Posay Effaclar Duo Acne Spot Treatment.
ত্বক উজ্জ্বল রাখতে যেসব বিষয় এড়িয়ে চলতে হবে
নিয়মিত যত্নের মাধ্যমে আমাদের ত্বকের ভালো উজ্জ্বলতা এবং মসৃণতা যেমন বৃদ্ধি করা সম্ভব ঠিক তেমনি কিছু ক্ষতিকর এবং অনুপযুক্ত অভ্যাস ত্যাগ করার মাধ্যমেও ত্বকের সুস্থতা নিশ্চিত করা সম্ভব। কেননা ত্বকের যত্নের পাশাপাশি যদি আমরা কিছু খারাপ অভ্যাস ত্যাগ না করি তবে সেটার ফলে আমাদের ত্বকের উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। সেজন্য আপনাকে ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করার সহজ কিছু টিপস সম্পর্কে জেনে কোনসব বিষয় আমাদের এড়িয়ে চলতে হবে সে সম্পর্কে জানা জরুরী।
কেননা সুন্দর ত্বক পাওয়ার জন্য শুধু যত্ন করলে চলবে না , সাথে জীবনধারার কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক জীবনধারার কোন সব পরিবর্তন আনার ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা ও মসৃণতা বজায় রাখা সম্ভব।
- অতিরিক্ত প্রসাধনীর ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা এটি অতিরিক্ত ব্যবহার এর ফলে আপনার ত্বকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে ব্রণের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- মেকআপ করলে অবশ্যই সেটা সঠিক ভাবে পরিষ্কার করতে হবে। কারণ আপনার ত্বকে মেকআপ এর ময়লা জমে সেটা বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
- আপনার ত্বক থেকে রোদপোড়া ভাব এড়াতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
- অপরিষ্কার হাত দিয়ে ত্বক স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। কেননা আপনার হাতের ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।
- আপনার ত্বককে শুষ্কতা ও রুক্ষতা থেকে রক্ষা করতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
- বিভিন্ন রকমের তেলযুক্ত ও চর্বিযুক্ত খবর গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন। কেননা এসব অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে আপনার ত্বকের তেলতেলে ভাব ও ব্রণ বাড়িয়ে থাকে।
- চোখের ক্লান্তি এবং চোখের নিচের ডার্কসার্কেল দূর করতে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম করুন।
- ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে বিরত থাকুন। এসব গ্রহণের ফলে ত্বকের আর্দ্রতা কমে যায় এবং ত্বকে বয়সের ছাপ দ্রুত ফেলে দেয়।
- বিভিন্ন ধরনের সস্তা ও নিম্নমানের পণ্য এড়িয়ে চলুন। সস্তা পণ্য ব্যবহার এর ফলে ত্বক জ্বালা পোড়া করে সাথে ত্বকের এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
যেসব পানীয় পান করলে ত্বক মসৃণ হয়
ত্বকের মসৃণতা ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে পানীয়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি সুস্থ ও মসৃণ ত্বক পেতে চান তবে আপনাকে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর পানীয় পান করতে হবে। কেননা পুষ্টিকর পানীয় আপনার ত্বকের ভেতর থেকে পুষ্টি যোগাবে এবং আর্দ্রতা ধরে রাখবে। সাথে আপনার ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে। সে জন্য আপনার ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করার সহজ কিছু টিপস এর মধ্যে ত্বকের উজ্জ্বলতা ও মসৃণতা বজায় রাখতে বিশেষ কিছু পানীয় পান করা খুবই কার্যকরী। চলুন সেই পানীয়গুলো কি কি জেনে ফেলি।
ডাবের পানিঃ ডাব এক ধরণের প্রাকৃতিক ফল। আর এটি প্রাকৃতিক ফল হওয়ায় প্রচুর ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ। যা আপনার ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখবে এবং ব্রণের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করবে। তাই ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখার জন্য ডাবের পানি পান করা খুব কার্যকরী।
আরো পড়ুনঃ শীতকালে নিজেকে ফিট রাখার কিছু সহজ টিপস
লেবুর পানিঃ আপনি হয়তো জানেন যে লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। যার জন্য লেবু আমাদের অনেক উপকার সাধন করে থাকে। শুধু তাই নয়, লেবুতে থাকা ভিটামিন সি আমাদের ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃন করতে বিশেষ কার্যকরী। সাথে এটি আমাদের ত্বকের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে থাকে।
গ্রিন টিঃ গ্রিন টি অর্থাৎ সবুজ চা আমাদের ত্বকের জন্য অনেক সাহায্যকারী একটি পানীয়। কেননা এতে বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের ত্বকের বার্ধক্য দূর করে। পাশাপাশি ত্বকের বিভিন্ন দাগ দূর করে থাকে।
ফলের রসঃ বিভিন্ন রকমের ফল যেমন কমলা, বেদানা ইত্যাদির রসে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের ত্বকের টেক্সাচার উন্নত করে। যেটা আমাদের ত্বকের জন্য বিশেষভাবে কার্যকরী। তাই আপনার উচিত হবে নিয়মিত ফলের রস পান করা।
দুধ ও হলুদের মিশ্রণঃ দুধ আমাদের শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে এটা আপনি হয়তো জানেন। তবে দুধ আর হলুদ এক সাথে মিশিয়ে এর রস পান করলে কি হয় এটা জানেন কি ? চলেন জেনে নিই। হলুদ এবং দুধ এক সাথে মিশালে এতে বিদ্যমান উপাদানগুলো আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং মসৃণতা বজায় রাখে।
অ্যালোভেরা জুসঃ অ্যালোভেরা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এটা আমাদের সবারই জানা। তবে শুধু তাই নয়, অ্যালোভেরা জুস খাবার ফলে আমাদের ত্বকের প্রদাহ কমে যায়। যার ফলে আমাদের ত্বকের আর্দ্রতা বাড়ে এবং ত্বক উজ্জ্বল হয়।
উজ্জ্বলতা বাড়াতে যেসব ভিটামিন ব্যবহার করা উচিত
আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য শুধু বাহ্যিক যত্ন না, বরং আমাদের শরীরের ভেতর থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করা অত্যন্ত জরুরি। সে ক্ষেত্রে আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য বিশেষ কিছু ভিটামিন রয়েছে, যেইগুলো আমাদের জন্য অনেক বেশি কার্যকরী। আমরা যদি প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এসকল ভিটামিন যুক্ত করি তবে আমাদের ত্বক ধীরে ধীরে উজ্জ্বল ও মসৃণ হয়ে উঠবে। তাই এখন আমরা এমন কিছু কার্যকরী ভিটামিন সম্পর্কে জানবো যেইগুলো আমাদের ত্বকের জন্য অসাধারণ ভূমিকা রাখে।
১। ভিটামিন সি
ভিটামিন সি আমাদের ত্বকের কোলাজেন তৈরি বৃদ্ধি করে থাকে। সাথে ত্বকের ছোপ দাগ দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও ভিটামিন সি আমাদের তোকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে যা আমাদের ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে রক্ষা করে থাকে। ভিটামিন সি এর মধ্যে পড়ে লেবু, কমলালেবু, আমলকী, বেদানা ইত্যাদি। তাই আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং ত্বককে বিভিন্ন ক্ষতিকারক উপাদান থেকে রক্ষা করতে অবশ্যই ভিটামিন কি খাওয়া উচিত।
২। ভিটামিন ই
এটি এমন এক ধরনের ভিটামিন যা আমাদের ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার পাশাপাশি আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে থাকে। শুধু তাই নয়, এটি আমাদের ত্বকের পুনর্গঠন করতে অধিক কার্যকরী এক ধরনের ভিটামিন। ভিটামিন ই এর মধ্যে পড়ে বাদাম, সূর্যমুখীর বীজ, অ্যাভোকাডো ইত্যাদি। এই ধরনের ভিটামিন যদি আপনি নিয়মিত খান তবে সেটা আপনার ত্বকের জন্য এক ধরনের ঔষুধ হিসেবে কাজ করবে।
৩। ভিটামিন এ
আমরা অনেকেই আমাদের ত্বকের বলিরেখা দূর করার জন্য অনেক কিছু করে থাকি। কিন্তু আমরা কি জানি যে নিয়মিত ভিটামিন এ খাওয়ার ফলে যেমন আমাদের ত্বকের কোষ পুনর্নবীকরণ হয় ঠিক তেমনি আমাদের ত্বকের বলিরেখা দুর হয়। হ্যাঁ, এর পাশাপাশি ভিটামিন এ আমাদের ত্বকের টেক্সচার উন্নত করতে অধিক কার্যকরী। ভিটামিন এ এর মধ্যে পড়ে গাজর, মিষ্টি আলু, পালং শাক ইত্যাদি।
৪। ভিটামিন ডি
আমরা যদি একটু খেয়াল করি তাহলে বুঝতে পারবো যে আমাদের অনেকের ত্বকের কোষ নরম। যার জন্য বিভিন্ন রকমের সমস্যায় পড়তে হয় আমাদের। সে ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি হলো এর ঔষুধ। কেননা ভিটামিন ডি খাবার ফলে আমাদের ত্বকের প্রদাহ তো কমেই সাথে এটি আমাদের ত্বকের নরম কোষগুলো অনেকটা শক্তিশালী করে। পাশাপাশি ভিটামিন ডি আমাদের ত্বকের টোন উন্নত করে এবং আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাহলে এবার নিশ্চয় বুঝতে পারছেন যে ভিটামিন ডি আমাদের জন্য কতটা কার্যকরী। ভিটামিন ডি এর মধ্যে পড়ে ডিমের কুসুমে, দুধ এবং সূর্যের আলো।
৫। ভিটামিন কে
আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা রক্ষার্থে এবং ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করার সহজ কিছু টিপস এর মধ্যে ভিটামিন কে এর ও অনেক ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু কিভাবে? ভিটামিন কে আমাদের চোখের ডার্কসার্কেল, ব্রণের দাগ এবং ত্বকের লালচে দাগ দূর করে থাকে। শুধু তাই নয়, এটি রক্ত জমাট বাঁধার মাধ্যমে ত্বকের নিরাময়ে অনেকটা সাহায্য করে। নিশ্চয়ই এবার বুজে গেছেন ভিটামিন কে এর ভূমিকা কতটা বেশি। ভিটামিন কে এর মধ্যে রয়েছে ব্রোকলি, পালংশাক, বাঁধাকপি ইত্যাদি।
সবশেষে আমাদের কিছু কথা
আমরা ইতিমধ্যে আপনাদের সাথে আলোচনা করেছি ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃন করার সহজ কিছু টিপস নিয়ে। কিভাবে আপনি আপনার ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃন করবেন, কোন সব খাবার খেলে ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃন হয়, এছাড়াও আরো কি কি অভ্যাস করলে এবং পরিবর্তনের মাধ্যমে ত্বক উজ্জ্বল করা সম্ভব এ সমস্ত বিষয় নিয়ে আজকের আর্টিকেলে খুব সুন্দর ভাবে আলোচলা করেছি। আমি আশা করছি পুরো আর্টিকেল মন দিয়ে পড়ার পরে আপনি সব বিষয় খুব সুন্দর ভাবে বুঝে গেছেন যে কিভাবে আপনি আপনার ত্বক মসৃণ করবেন।
আজকের এর আর্টিকেল থেকে আপনি অনেক উপকৃত হবেন বলে মনে করছি। নিয়মিত এই ধরণের উপকারী টিপস পেতে আমাদের এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। কেননা আমরা প্রতিনিয়ত এই ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। আপনার কোনো বিষয়ে জানার ইচ্ছে থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
হ্যাপিনেস ভ্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url