কিভাবে শারীরিক দুর্বলতা দূর করা যায় জেনে নিন খুব সহজেই


আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কর্মব্যস্ততার মাঝে আমরা নিজেদের শারীরিক যত্ন নেওয়ার কথা ভুলে যায়। যার ফলে আমাদের শরীর দিন দিন কেমন জানি দুর্বল হয়ে পড়ে। পরক্ষণে কিভাবে শারীরিক দুর্বলতা দূর করা যায় এই নিয়ে আমরা চিন্তিত হয়ে পড়ি।
কিভাবে শারীরিক দুর্বলতা দূর করা যায় জেনে নিন
তবে আমাদের শারীরিক দুর্বলতা দূর করার জন্য এমন কিছু উপায় আছে যেইগুলা আমরা মেনে চলতে পারলে খুব তাড়াতাড়ি আমাদের শারীরিক দুর্বলতা দূর করা সম্ভব হবে। আপনি যদি সেইসব সহজ উপায়গুলো জানতে চান তবে আজকের এই আর্টিকেলটা মন দিয়ে পড়ে ফেলুন। 

পোস্ট সূচীপত্রঃ কিভাবে শারীরিক দুর্বলতা দূর করা যায় জেনে নিন 

কিভাবে শারীরিক দুর্বলতা দূর করা যায় 

শারীরিক দুর্বলতা এটি এমন একটি রোগ যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বাঁচার সৃষ্টি করে থাকে। এটি যে শুধু আমাদের কাজের ক্ষমতা কমিয়ে দেই এমনটি নয়, বরং এটি আমাদের জীবনে আনন্দ কমিয়ে দেয়। সেক্ষেত্রে আমরা যদি সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শরীর চর্চা এবং পরিবার মত বিশ্রাম নিয়ে থাকি তবে আমাদের শারীরিক দুর্বলতা দূর করতে এটি অনেক বেশি কার্যকর হবে। তো চলুন কিভাবে শারীরিক দুর্বলতা দূর করা যায় সে সম্পর্কে খুব সহজেই জেনে ফেলি। 

আপনার যদি শারীরিক দুর্বলতা থেকে থাকে তবে আপনার দুর্বলতা দূর করতে প্রথমে যেটা অধিক পরিমাণে কার্যকরী হবে সেটা হল পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ। সে ক্ষেত্রে আপনি মাছ, মাংস, ডাল ইত্যাদি খেতে পারেন যা আপনার শরীরের শক্তি যোগাবে।এছাড়াও চর্বি জাতীয় খাবার আমাদের শরীরে প্রাথমিক শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে। শারীরিক দুর্বলতা দূর করার জন্য যেসব খাদ্য আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় দাঁড়িয়ে থাকে সেইসব খাবার গ্রহণ করা উচিত। উদাহরণ হিসেবে আমরা বলতে পারি শাকসবজি ও ফলমূল। 

নিয়মিত শরীর চর্চা করার ফলেও শারীরিক দুর্বলতা দূর করা সম্ভব। কেননা শরীরচর্চার ফলে আমাদের মানসিক অবস্থা ভালো থাকে।যেহেতু মানসিক অবস্থা ভালো থাকে সে ক্ষেত্রে আমাদের শারীরিক দুর্বলতা হ্রাস পায়।এছাড়াও যদি আপনার শরীরে শারীরিক দুর্বলতা থাকে তবে আপনার শরীরের শারীরিক দুর্বলতা দূর করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম দেওয়া প্রয়োজন।কেননা আপনি যদি কর্ম ব্যস্ত মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে খেয়াল করবেন পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না দেওয়ার কারণে আপনি শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। 

সেজন্য আপনার শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে ঘুম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন আপনার মানসিক অবস্থা যেন সব সময়ের জন্য ভালো থাকে। এতক্ষণে হয়তো জেনে গেছেন যে মানসিক অবস্থা খারাপ থাকলে শারীরিক দুর্বলতা আসে। কিন্তু আপনি জানেন কি, মানসিক চাপকে শারীরিক দুর্বলতার প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয়? তাই আপনার উচিত ইতিবাচক আচরণের সাথে প্রতিটি দিনের শুরু করা। এটি আপনার শুধু শারীরিক দুর্বলতা দূর করবে এমনটি নয় বরং আপনার ব্যক্তিগত জীবনের উপরেও অনেক সুন্দর প্রভাব ফেলবে। 

শারীরিক দুর্বলতা কী 

আমরা অনেকেই জানি শারীরিক দুর্বলতা কি কিন্তু এর সঠিক ভাবটা আমাদের অনেক কিছু অজানা। সেজন্য আপনার শুরুতেই জানা উচিত যে শারীরিক দুর্বলতা আসলে কি? আসলে শারীরিক দুর্বলতা এমন একটি অবস্থা যেখানে আমাদের শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে শক্তি ধরে রাখতে পারে না। যার ফলে আমাদের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়। শারীরিক দুর্বলতা এমন এক ধরনের রোগ যেটা খুব সহজেই আমাদের মাঝে ক্লান্তি নিয়ে আসে। যার ফলে আমাদের শারীরিক ও মানসিক কর্মক্ষমতা কমে যায়।


শারীরিক দুর্বলতায় এমন এক ধরনের লক্ষণ যেটা আমাদের শরীরে অন্য কোন রকমের রোগ থাকলে সেটার ইঙ্গিত দেয়।আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি, প্রোটিন ও ভিটামিনের অভাবে শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেয়। এছাড়াও ঘুমের ঘাটতি, মানসিক চাপ, অনিয়মিত জীবন যাপন এসবের ফলেও শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিয়ে থাকে। তাই আমাদের উচিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম দেওয়া এবং বিভিন্ন রকমের চাপমুক্ত থাকা। একটা কথা মনে রাখবেন শারীরিক দুর্বলতা দূর করার জন্য সুস্থ জীবন যাপন করাই সবচেয়ে বড় সমাধান।

শরীর দুর্বল হওয়ার কারণসমূহ 

কি কারনে আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে থাকে? আর কিভাবে শারীরিক দুর্বলতা দূর করা যায়? এসব প্রশ্ন হয়তো আপনার মাথায় ঘুরপাক খায় তাই না। তবে আপনার এসব প্রশ্নের সমাধান আমার কাছে রয়েছে।শরীর দুর্বল হওয়ার পিছনে বিভিন্ন রকমের কারণ থাকতে পারে। যা আমাদের জীবনের ধরন থেকে একদম রোগ পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। তো চলুন এবার খুব সহজভাবে আমরা জেনে নিই যে আমাদের শরীর কি কি কারণে দুর্বল হয়ে থাকে। 

শারীরিক পুষ্টির ঘাটতিঃ পুষ্টির ঘাটতি বলতে বোঝায় ভিটামিন, প্রোটিন ও খনিজের ঘাটতি। আর এই সকল পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীর থেকে যখন কমে যায় ঠিক তখনই আমাদের শরীরের দুর্বলতা শুরু হয়। এছাড়াও সুষম খাদ্যের অভাবেও শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিয়ে থাকে। 

অনিয়মিত জীবন যাপন করাঃ শারীরিক দুর্বলতার একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে অনিয়মিত জীবন যাপন করা। পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রামের অভাবে আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। অতিরিক্ত কাজের চাপের ফলেই আমাদের বিশ্রাম নেওয়ার তেমন একটা সময় হয় না। যার কারণেই আমাদের শরীরে দুর্বলতার প্রভাব দেখা দেয়। 

মানসিক চাপঃ বিভিন্ন রকমের মানসিক চাপের ফলেও আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। কেননা মানসিক চাপ এক ধরনের পিড়া। যা আমাদেরকে বিভিন্নভাবে চিন্তিত করে এবং শারীরিকভাবে দুর্বল করে ফেলে। 

অপর্যাপ্ত পানি পানঃ অপর্যাপ্ত পানি পানির ফলেও আমাদের শরীরে দুর্বলতা দেখা দেয়। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করার ফলে আমাদের শরীর নিয়ন্ত্রিত থাকে। কিন্তু অপর্যাপ্ত পানি পান করার ফলে ডিহাইড্রেশন আমাদের শরীরের শক্তি কমিয়ে ফেলে।যার ফলে শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেই। 

দুর্বলতা এড়াতে যেসব খাদ্য গ্রহণ করা উচিত

শারীরিক দুর্বলতা এমন এক ধরনের রোগ যা আমাদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। সেক্ষেত্রে শারীরিক দুর্বলতা দূর করার জন্য পুষ্টিকর খাবারের কোন বিকল্প নেই। বিভিন্ন রকমের খনিজ ও ভিটামিন যুক্ত খাবার আমাদের শরীরে শক্তি ও কর্ম ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য অত্যন্ত জরুরী। এছাড়াও আরো কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো আমাদের শরীরের দুর্বলতা কাটিয়ে আমাদের শরীরে শক্তি প্রদান করে। তো চলুন যেসব খাবার খেলে শারীরিক দুর্বলতা দূর করা যায় সেই সকল খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনে নিই। 

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারঃ শারীরিক দুর্বলতা দূর করতে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার অন্যরকম ভূমিকা রাখে।বিশেষ করে ডিম, দুধ, মাছ, মাংস ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। যেগুলো খাবার ফলে আমাদের শরীরে প্রোটিনের চাহিদা পূর্ণতা পায় এবং শারীরিক দুর্বলতা কমিয়ে দেয়। এছাড়াও আপনার শারীরিক দুর্বলতা দূর করার জন্য শক্তি প্রদানকারী মিষ্টি আলু খাওয়া উচিত। কেননা এটি শরীরে শক্তির জোগান দিয়ে থাকে। 

আরো পড়ুনঃ অ্যালোভেরা খাওয়ার ফলে যে ১০ টি উপকার পাবেন

ভিটামিন যুক্ত খাবারঃ কলা, আপেল, কমলা, আঙ্গুর ইত্যাদির মাঝে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন থাকে।যেইগুলা খাবার ফলে আপনার শরীরে ভিটামিন ও খনিজের উৎপাদন বাড়বে। এছাড়াও ভিটামিনযুক্ত শাকসবজি যেমন পালং শাক, ব্রকলি সহ আরো বিভিন্ন রকমের শাকসবজি খাওয়া উত্তম। যেগুলো আপনার শরীরে ভিটামিন ও খনিজের অভাব দূর করে শরীরকে শক্তিশালী করে তুলবে। শারীরিক দুর্বলতা দূর করতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা উচিত। সেক্ষেত্রে নারিকেলের পানি এবং লেবুর শরবত আরো বেশি কার্যকরী। 

চর্বি জাতীয় খাবারঃ আপনার শারীরিক দুর্বলতা দূর করার জন্য চর্বি জাতীয় খাবারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন প্রকারের বাদাম যেমন কাজু, আখরোট, কাঠবাদাম ইত্যাদি, সূর্যমুখীর বীজ এবং চিয়া সিড এ সকল শর্করা জাতীয় খাবার আমাদের শরীরে শক্তির যোগান দিয়ে থাকে। যার ফলে আমাদের শরীর শক্তিশালী হয় এবং শারীরিক দুর্বলতা দূর হয়। এবার আপনি নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন যে শারীরিক দুর্বলতা দূর করার জন্য আমাদের কোন সব খাবার গ্রহণ করা উচিত। প্রতিনিয়ত এইসব খাদ্য গ্রহণ করা আপনার শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে যথেষ্ট হবে। 

অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে দুর্বলতা এড়ানো 

কিভাবে শারীরিক দুর্বলতা দূর করা যায় জেনে নিন
আপনি কি জানেন, আপনি দৈনন্দিন জীবনে যেভাবে চলাফেরা করেন সেই অভ্যাসটা পরিবর্তনের ফলেও আপনার শারীরিক দুর্বলতা দূর করা সম্ভব? হ্যাঁ অভ্যেস পরিবর্তনের ফলেও আপনার শারীরিক দুর্বলতা দূর করা সম্ভব। কেননা দৈনন্দিন জীবনে যদি আপনার চলাফেরায় কিছু খারাপ অভ্যাস থেকে থাকে তবে এটাই আপনার শারীরিক দুর্বলতার কারণ হতে পারে। বিষয়টা হয়তো আপনি এখনো বুঝতে পারেননি। তাহলে চলুন কিভাবে অভ্যাস পরিবর্তন এর মাধ্যমে শারীরিক দুর্বলতা দূর করা যায় সে সম্পর্কে জেনে নিই।

ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে বিরতঃ ধূমপান ও অ্যালকোহল গ্রহণ করার ফলে আপনার শরীরের দুর্বলতা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি রয়েছে। কেননা এসব সেবনে আপনার শরীরের কোষ গুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলে। যেটা শারীরিক দুর্বলতা ও হতাশার সৃষ্টি করে। যদি আপনি এগুলো বাদ দিয়ে দেন তবে আপনার শরীর খুব তাড়াতাড়ি পুনর্গঠন করতে সক্ষম হবে। 

অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস পরিহারঃ আপনি সারাদিন পরিশ্রম করার ফলে যদি সময় মতো না খেতে পারেন তবে আপনার শরীরে দুর্বলতা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কেননা অনিমিত খাদ্যাভ্যাসের ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। সেই জন্য আমাদের শারীরিক দুর্বলতা এড়াতে সময়মতো পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন। 

অলসতা ও শরীরচর্চার অভাবঃ আজকাল অনেকে অলসতার জন্য ঠিকভাবে শরীর চর্চা করতে চাই না।কিন্তু আমাদের অলস জীবনযাপন পরিহার করে প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট শরীর চর্চা করা প্রয়োজন। সেই ক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে আমাদের এই শরীর চর্চা করার অভ্যাসটি গড়ে তোলা উচিত। কেননা শরীর চর্চা ঠিকভাবে করার ফলেও শারীরিক দুর্বলতা দূর হয়। 

দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকার অভ্যাস পরিবর্তনঃ আপনি যদি কোন কাজ দীর্ঘ সময় ধরে বসে থেকে করেন তবে আপনার শরীরে এক প্রকার দুর্বলতা কাজ করে। যার ফলে পরক্ষণে সেই কাজে আর মন বসে না। সেক্ষেত্রে আপনি যদি দীর্ঘ সময়ের কাজ করার সময় মাঝে মাঝে উঠে একটু করে হাঁটাচলা করেন তবে আপনার সে সমস্যা দূর হবে। চেষ্টা করবেন সঠিক ভঙ্গিতে বসার অভ্যাস গড়ে তোলা। 

শারীরিক দুর্বলতা এড়াতে যেসব ঔষধ খাওয়া উচিত 

কিভাবে শারীরিক দুর্বলতা দূর করা যায় সে সম্পর্কে এতক্ষণ আলোচনা করা হলো। তবে আপনার যদি ঔষধ খাওয়ার অভ্যাস থাকে তবে শারীরিক দুর্বলতার দূর করতে কোন ঔষধ খেলে আপনার জন্য কার্যকরী হবে সে সম্পর্কে এখন বলবো।সেক্ষেত্রে আপনার প্রথমেই এটি নির্ণয় করা উচিত যে আপনার দুর্বলতার প্রধান কারণ কি। কারণ বিভিন্ন রকমের অসুস্থতা এবং পুষ্টির অভাবে শারীরিক দুর্বলতা হয়ে থাকে। যা আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি। 

সেক্ষেত্রে সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত জীবনযাপন এর উপর ভিত্তি করে আপনার জন্য কিছু ঔষধ কার্যকর হতে পারে। তবে আমি আপনাকে শুধু একটা ধারণা দিচ্ছি যে আপনি দুর্বলতা কাটাতে কোন সব ঔষধ সেবন করতে পারবেন। ঔষধ খাবার পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। কেননা ওষুধের সঠিক ডোজ নির্ধারণ একজন বিশেষজ্ঞই ভালো দিতে পারে। 

আইরন সাপ্লিমেন্টঃ আইরন সাপ্লিমেন্ট আমাদের রক্তস্বল্পতা ও আইরনের অভাব দূর করে থাকে।আপনি যদি রক্তস্বল্পতা এবং আয়রনের অভাবে দুর্বলতায় ভোগেন তবে এটি আপনার জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও আইরন সাপ্লিমেন্ট আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে আমাদের শরীরকে শক্তিশালী করে তোলে। তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন এটি আপনার জন্য কতটা কার্যকারী। 

মাল্টিভিটামিন সাপ্লিমেন্টঃ আমরা যারা খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি উপাদান পায় না তাদের জন্য মাল্টিভিটামিন সাপ্লিমেন্ট বিশেষ কার্যকরী। এতে বিদ্যমান ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন সি আমাদের শরীরের শক্তি বাড়িয়ে থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর করে। 

ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিডঃ ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড আমাদের মস্তিষ্ক ও হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি কার্যকারী। এটা সেবনের ফলে আমাদের মস্তিষ্ক ও হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। যার ফলে কোনো রকমের ক্লান্তি ভাব বা দুর্বলতা আসে না।

ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডিঃ ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি আমাদের শরীরে হাড়ের দুর্বলতা কমাতে এবং শক্তি বাড়াতে বিশেষ কার্যকারী। বিশেষ করে যারা বয়স্ক ব্যক্তি তাদের জন্য এটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

প্রোটিন সাপ্লিমেন্টঃ নাম দেখেই হয়তো বুঝে গেছেন যে এটা কাদের জন্য বেশি উপকারী। বিশেষ করে যারা প্রোটিন স্বল্পতায় ভোগে, তারা প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট অথবা পাউডার সেবন করতে পারে। এতে করে প্রোটিনের স্বল্পতা দূর হয়ে আপনার শারীরিক দুর্বলতা হ্রাস পাবে। এছাড়াও প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট পেশির গঠন ও শক্তি বাড়াতে বিশেষ কার্যকারী।  

শারীরিক দুর্বলতা দূর করার ঘরোয়া উপায় 

কিভাবে শারীরিক দুর্বলতা দূর করা যায় এর অনেক রকম উপায় জানলাম। তবে শারীরিক দুর্বলতা দূর করার ক্ষেত্রে ঘরোয়া ভাবেও কিছু উপায় রয়েছে। যেইগুলো সহজে অনুসরণযোগ্য এবং অধিক কার্যকরী। প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া খাবার যেমন মধু, আদা ইত্যাদি আমাদের দুর্বলতা কাটাতে সাহায্য করে। এছাড়াও শারীরিক দুর্বলতা দূর করার ক্ষেত্রে আরো কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে যেগুলো কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই আমাদের শরীরের দুর্বলতা কাটিয়ে শক্তিশালী করে তোলে। তো চলুন দুর্বলতা কাটানোর ঘরোয়া উপায় গুলো জেনে নিই। 

আদা ও মধুর মিশ্রণঃ প্রকৃতি থেকে পাওয়া আলাদা ও মধু একসাথে মিশে খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের দুর্বলতা দূর করা সম্ভব। এটি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং শরীর যাবতীয় রকমের দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়। 

বাদান ও বিজঃ দুর্বলতা দূর করার জন্য কাজু এবং আখরোট বাদাম সাথে চিয়া সিড প্রতিদিন খাওয়া উত্তম। কেননা এটি খাবার ফলে শরীরের যাবতীয় রকমের দুর্বলতা দূরীভূত হয়ে শক্তি ফিরে আসে। 

তাজা ফলের রসঃ বিভিন্ন রকমের ফল যেমন কমলা, আপেল ও ডালিম ইত্যাদির রস পান করার ফলে আমাদের শরীরের দুর্বলতা কাটানো সম্ভব। কারণ এসব তাজা ফলের রস খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর সতেজ থাকে। 

দুধ ও খেজুরঃ শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গরম দুধের সাথে ২-৩ টি খেজুর মিশিয়ে পান করুন।এতে করে আপনি তাৎক্ষণিক শক্তি পাবেন। 

মধু ও লেবুঃ মধু ও লেবু একসাথে মিশ্রণ করে খাওয়ার ফলেও শারীরিক দুর্বলতা কামনা সম্ভব। কেননা এটি আপনার শরীরের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। সেক্ষেত্রে আপনাকে ১ গ্লাস হালকা গরম পানিতে ১ চামচ মধু ও অর্ধেক লেবু মিশিয়ে পান করতে হবে। 

দুর্বলতা নিয়ে ব্যক্তিগত প্রশ্ন ও সমাধান

শারীরিক দুর্বলতা নিয়ে আমাদের ব্যক্তিভেদে বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন থেকে যায়। যার কোন সমাধান আমরা বিভিন্ন রকমের পোস্ট পড়েও বের করতে পারি না। কিভাবে শারীরিক দুর্বলতা দূর করা যায় এই বিষয়ে সার্বিক দিক থেকে জানার পরেও আমাদের অনেকের মনে অনেক রকমের প্রশ্ন গেঁথে থাকে। তো চলুন আমরা আজকে ব্যক্তিভেদে এমন কিছু প্রশ্ন ও সমাধান করার চেষ্টা করি। যার ফলে আমরা খুব সহজেই কোনো প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবো। 

প্রশ্নঃ আমি প্রতিনিয়ত কাজ করার সময় ক্লান্ত হয়ে পড়ি। এটার সমাধান কি? 

উত্তরঃ আপনার এরকম ক্লান্তি দূর করতে প্রোটিন ও শর্করা সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। যেসব খাবারে তালিকা এই আর্টিকেলের মধ্যে খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া আপনাকে প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। 

প্রশ্নঃ দীর্ঘ সময় ধরে বসে কাজ করার জন্য দুর্বল বোধ করছি। এতে সমাধান কি? 

উত্তরঃ কাজ করার সময় প্রতি ঘন্টায় অন্তত ৫ থেকে ১০ মিনিট হাঁটুন। সঠিক নিয়মে বসে কাজ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। পাশাপাশি হালকা ব্যায়াম করে নিতে পারেন। এছাড়া কাজের ফাঁকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন যেটা আপনার শরীরকে হাইড্রেট করে রাখবে। 

প্রশ্নঃ আমার ঘুম ঠিক ভাবে হচ্ছেনা যার কারণে অনেক দুর্বল বোধ করছি। এতে করণীয় কি? 

উত্তরঃ ঘুমানোর পূর্বে ক্যাফেইনযুক্ত পানি পান করা থেকে বিরত থাকুন। ঘুমের একটা রুটিন তৈরি করুন এবং প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানোর অভ্যাস করুন। ঘুমানোর আগে হালকা বই পড়ার অভ্যাস করুন। একটি আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করুন। 

প্রশ্নঃ আমি দীর্ঘদিন ধরে দুর্বল অনুভব করছি। আমার কি ধরনের খাবার খাওয়া উচিত? 

উত্তরঃ শরীরে প্রোটিন বৃদ্ধির জন্য মাছ, মাংস, ডিম এবং বাদাম খান। তাজা ফল যেমন কলা, আপেল এবং ডালিমের রস পান করুন। শাকসবজির মধ্যে পালং শাক এবং ব্রকলি খান যা আপনার আয়রনের ঘাটতি কমিয়ে দিবে। শরীরের শক্তি বাড়াতে দুধ ও খেজুরের মিশ্রণ করে খান। 

প্রশ্নঃ আমি দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত হওয়ার জন্য সব সময় দুর্বল বোধ করি। কিভাবে এর উন্নতি করা সম্ভব? 

উত্তরঃ পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন এবং হালকা ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরকে শক্তিশালী করে তুলুন।পাশাপাশি মানসিক চাপ কমাতে ধ্যান করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ গ্রহণ করুন। 

নিয়মিত যেসব কাজ করলে দুর্বলতা এড়ানো সম্ভব 

কিভাবে শারীরিক দুর্বলতা দূর করা যায় জেনে নিন
শারীরিক দুর্বলতা এড়ানোর জন্য আমাদের কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করা উচিত। শুধু তাই নয় সেগুলো আমাদের অভ্যাসে পরিণত করা দরকার। তবেই শারীরিক দুর্বলতা দূর করা সম্ভব। আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য একটি সুন্দর ও সুশৃংখল জীবন যাপন প্রয়োজন। তার জন্য আমাদের যেসব কাজ করতে হবে সেগুলো এখন জানতে পারবো। পাশাপাশি সেগুলো অভ্যাসের পরিণত করার চেষ্টা করবো। তাহলে চলুন এবার জেনে নিই নিয়মিত যেসব কাজ করলে দুর্বলতা সম্ভব। 

  • সূর্যের আলো গ্রহণ করা। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সূর্যের আলো গ্রহণ করেন তবে এটি ভিটামিন ডি এর অভাব পূর্ণ করে পাশাপাশি শরীরে শক্তি এনে দেয়। 
  • শারীরিক দুর্বলতা কাটার জন্য নিয়মিত প্রার্থনা ও শ্বাস প্রশ্বাসের অনুশীলন করুন। এতে করে আপনার মানসিক চাপ কমে যাবে।
  • সারাদিনে অন্তত কয়েক ঘন্টার জন্য নিজেকে সময় দিন এবং নিজের পছন্দমত কাজ করুন। যার ফলে আপনার মনটা অনেক হালকা হবে এবং আপনার অনেক ভালো লাগা কাজ করবে। 
  • নারিকেলের পানি বা লেবুর শরবত পান করুন। এটি আপনার শরীরে ডিহাইড্রেশন দূর করতে সহায়ক। 
  • প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিটের মতো হাঁটাহাটি অথবা যোগ ব্যায়াম করুন। এতে করে শরীরের পেশি মজবুত হয়। 
  • প্রোটিন যুক্ত ও খনিজ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। দুগ্ধ জাতীয় খাবার গ্রহণ করুন। 
  • খাওয়া দাওয়া, কাজ এবং ঘুমের একটি সুশৃংখল রুটিন তৈরি করে রাখুন। যেটা আপনার দৈনন্দিন জীবনের পথ চলা হিসেবে সহায়ক হবে। 

আমার শেষ কিছু কথা

কিভাবে শারীরিক দুর্বলতা দূর করা যায় এই সম্পর্কে খুব সহজভাবে এই আর্টিকেলের মধ্যে জানানো হয়েছে। এছাড়াও শারীরিক দুর্বলতা দূর করার ঘরোয়া উপায় এবং কি কি ওষুধ সেবন করা উচিত সে সম্পর্কেও লিখা আছে। আপনি যদি পুরো আর্টিকেলের সমস্ত উপায় ও নিয়ম নীতিগুলো মন দিয়ে পড়েন তবে এটি আপনার শরীরের দুর্বলতা দূর করার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে। আমি আশা করি পুরো আর্টিকেল পড়ার পরে আপনি অনেক বেশি উপকৃত হবেন। 

আমার এই ওয়েবসাইটে নিয়মিত এই ধরনের উপকারী আর্টিকেল খুব সুন্দর ভাবে প্রকাশ করা হয়।আপনি যদি নিয়মিত এই ধরনের আর্টিকেল পড়তে চান তবে আমার এই ওয়েবসাইটটি ফলো করে চলুন। এতে করে আপনি আজকের মত যাবতীয় বিষয়গুলো খুব সুন্দর ভাবে জানতে পারবেন।অবশেষে আপনার একটি সুন্দর মতামত কামনা করছি। এতক্ষণ আমার সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

হ্যাপিনেস ভ্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url