শীতকালে নিজেকে ফিট রাখার কিছু সহজ টিপস
পেজ সূচিপত্রঃ শীতকালে নিজেকে ফিট রাখার কিছু সহজ টিপস
- শীতকালে নিজেকে ফিট রাখার উপায়
- শীতকে যেভাবে উপভোগ করা উচিত
- শীতের সকালে আমাদের যা করণীয়
- শীতকালে সঠিক ও পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস
- শীতে যেভাবে শরীরের যত্ন নিতে হবে
- শীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর উপায়
- শীতকালে শরীর উষ্ণ রাখার টেকনিক
- শীতকালে মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া
- শীতকালীন রোগ এড়িয়ে যাওয়ার উপায়
- আমাদের শেষ কিছু কথা
শীতকালে নিজেকে ফিট রাখার উপায়
শীতকাল এবং একটি ঋতু যেটা আমাদেরকে আরামদায়ক আবহাওয়া উপহার দেয়। কিন্তু আমরা অনেকেই এই ঋতুতে শরীর চর্চা ও স্বাস্থ্যের প্রতি উদাসীন হয়ে পড়ি। সে ক্ষেত্রে আমরা যদি শীতকালে নিজেকে ফিট রাখার কিছু সহজ টিপস জেনে যায় তবে ব্যাপারটা আমাদের জন্য কেমন হতে পারে একটু ভেবে দেখুন তো? হ্যাঁ, ব্যাপারটা অনেক দারুন কিন্তু। তো চলুন ঝটপট আমরা জেনে নিই যে শীতকালে আমরা নিজেদের শরীরকে কিভাবে ফিট রাখতে পারি।
শীতকালে আপনার ফিটনেস ঠিক রাখার প্রথম উপায় হলো একটা পুরো দিনের রুটিন তৈরি করা। আর সেই রুটিন এর মধ্যে এমন কিছু রাখা উচিত যে সেটা সার্বিক দিক থেকে আপনার জন্য পারফেক্ট হয়। এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে এটা আমি কিভাবে করবো ? আমার তো কিছুই জানা নাই। আপনার চিন্তার কোনো কারণ নাই। কেননা আপনার রুটিন এখন আমি তৈরি করে দিবো। যেইটা ঠিকভাবে যদি মেনে চলতে পারেন তবে পুরো শীত আপনি আনন্দের সাথে উপভোগ করতে পারবেন।
আপনার রুটিনের শুরুতেই থাকবে যে শীতের সকালটা আপনি কিভাবে শুরু করবেন। কেননা শুরুটা যদি সুন্দর হয় তবে শেষ টাও সুন্দর হবে। এরপরে শীতকালে সুস্বাস্থ্যের জন্য আপনার কি রকম খাদ্য গ্রহণ করা উচিত সেটা সম্পর্কে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে। বিশেষ করে শীতকালে আপনার কি রকম পোশাক পরা উচিত সে সম্পর্কেও সুস্পষ্ট একটা ধারণা থাকা দরকার। শীতকালে কিভাবে আপনি আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিবেন, কিভাবে বিভিন্ন রকমের রোগ এড়িয়ে যাবেন, এ সমস্ত কিছুই আজকের আর্টিকেলে প্রকাশ করতে যাচ্ছি। সেজন্য খুব সুন্দর ভাবে জেনে নিন শীতকালে নিজেকে ফিট রাখার কিছু সহজ টিপস।
শীতকে যেভাবে উপভোগ করা উচিত
যখন প্রকৃতি তার উত্তম রূপে সেজে ওঠে ঠিক তখনই শীতকাল এসে হানা দেয় আমাদের মাঝে। বিশেষ করে শীতের কুয়াশা ঢাকা সকাল, ঠান্ডা বাতাস এবং রোদেলা দুপুর আমাদের শীতের দিনগুলোকে অনেক বেশি স্মরণীয় করে তোলে। এই সময়টা প্রকৃতিকে উপভোগ করা, পরিবার ও বন্ধুদের সাথে মধুর সময় কাটানো এবং নিজের মধ্যে সতেজতা ফিরিয়ে আনার একটি আদর্শ সময়। তো চলুন সংক্ষেপে জেনে নিই শীতকে আমরা কিভাবে উপভোগ করতে পারি।
শীতকালে যখন আকাশ ফাঁড়ি দিয়ে মিষ্টি রোদ বের হবে আপনি ঠিক সেই সময় রোদের মধ্যে গিয়ে বসুন। কেননা এই রোদের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে। যেইটা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। সেই সাথে শীতের রোদ উপভোগ করার পাশাপাশি আপনি যেকোনো বই পড়তে পারেন অথবা গান শুনতে পারেন। বিষয়টা আপনাকে অনেক বেশি ভালো লাগাবে। সুযোগ হলে গ্রাম বা শহরের দৃশ্যগুলো উপভোগ করতে পারেন। শীতকালে আপনি পিকনিকের আয়োজন করতে পারেন। এটি আপনার মনের মধ্যে সতেজতা ও প্রশান্তি এনে দিবে।
আরো পড়ুনঃ সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
এরপরে শীতের রাতে আপনি আপনার পরিবারের সাথে সুন্দর একটি গল্পের আসর জমাতে পারেন। সাথে যদি চা বা কফি থাকে তাহলে সেটা আরো বেশি জমে যাবে। এছাড়াও আপনি শীতের রাতে ঘরোয়া খেলাধুলা পাশাপাশি রাতের খেলাধুলারও আয়োজন করতে পারেন। আমরা প্রায় সকলেই জানি শীতের আসল মজা হচ্ছে শীতের পিঠাপুরিতেই। সেজন্য শীতকালে পিঠাপুরি আয়োজন করতে কিন্তু মোটেও ভুলবেন না। আপনি যদি এইভাবে শীতকে উপভোগ করতে পারেন তবে সেটা আপনার জন্য সবচেয়ে বেশি আনন্দদায়ক হবে।
শীতের সকালে আমাদের যা করণীয়
শীতকাল এমন একটি ঋতু যার প্রতিটি দিন আপনাকে অনেক হিসেব করে চলতে হবে। বিশেষ করে আপনি শীতের সকালটা যদি রুটিন মেনে খুব সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারেন তবে সেটা আপনার জন্য হবে একটা প্লাস পয়েন্ট। কেননা এই সময়টা এমন একটা সময় যেইটার উপর নির্ভর করবে শীতকালে আপনার শারীরিক অবস্থা কেমন থাকবে। তাহলে এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে শীতের সকালটা আপনার জন্য কতটা মূল্যবান। তো চলুন এবার জেনে নিই শীতের সকালে আমাদের করণীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস।
- শীতের সকালে সমস্ত রকমের অলসতা দূর করে ভোরে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলুন। কেননা ভোরের কুয়াশা আচ্ছন্ন প্রকৃতি এবং স্নিগ্ধ বাতাস আপনার মনে সতজতা এনে দেবে।
- শীতের সকালের নরম রোদ উপভোগ করুন। কেননা এই রোদে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে। যার ফলে আপনার হাড় মজবুত হয় এবং মনে প্রশান্তি আসে।
- শীতের মধ্যে ঠান্ডা আবহাওয়াই সকালের দিকে হালকা ব্যাম অর্থাৎ হাটাহাটি অথবা যোগ ব্যায়াম করতে পারেন। এতে আপনার শরীর গরম হবে।
- শীতের সকালে কফি অথবা আদা চা পান করতে পারেন। কেননা এটি শরীরকে উষ্ম রাখতে সাহায্য করবে পাশাপাশি সর্দি-কাশি প্রতিরোধ করতে সহায়ক হবে।
- শীতের সকালের প্রকৃতি উপভোগ করুন। বিশেষ করে পাখির ডাক শুনতে পারেন কেননা এটি আপনার মনকে সতেজ, শান্ত এবং চাঙ্গা করে তুলবে।
- শীতের ঠান্ডা এড়াতে হাত অথবা গলা ঢাকার জন্য মাফলার কিংবা টুপি ব্যবহার করতে পারেন। পাশাপাশি শীতের যাবতীয় পোশাক তো আছেই।
শীতকালে সঠিক ও পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস
শীতকালে আমাদের শরীরকে বিশেষভাবে যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। কেননা শীতকালের ঠান্ডা আবহাওয়া, বিভিন্ন রকমের রোগ বালাই, শুষ্ক পরিবেশ প্রতিরোধে আমাদের সঠিক খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ করা প্রয়োজন। সেজন্য শীতকালে আমাদের এমন কিছু খাদ্য গ্রহণ করা উচিত যেগুলো আমাদের শরীরকে উষ্ণ রাখে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, পাশাপাশি আমাদের শরীরে শক্তির যোগান দিয়ে থাকে। তো চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক শীতকালে নিজেকে ফিট রাখার জন্য কোন সব খাদ্য আমাদের গ্রহণ করা উচিত।
মৌসুমী ফল ও সবজিঃ শীতকালে অনেক রকমের ফল ও সবজি পাওয়া যায় যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। বিশেষ করে পালং শাক ও বাঁধাকপিতে ভিটামিন এ ও সি রয়েছে। এছাড়াও এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে। এছাড়াও শীতের আরো কিছু সবজি যেমন গাজর ও বীট আমাদের ত্বক ও শরীরের সুরক্ষা দিয়ে থাকে। এছাড়াও শীতের মৌসুমী ফল কমলা, আমলকি, মাল্টায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকার ফলে এগুলো আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে থাকে।
গরম ও উষ্ণ খাবার গ্রহণঃ শীতকালের ঠান্ডা পরিবেশের মধ্যে আমাদের গরম খাবার গ্রহণ করা উচিত যেগুলো আমাদের শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করবে। বিশেষ করে মুরগির ডিম এবং সবজির স্যুপ খাওয়া উত্তম। কেননা এটি যেমন হজমে সহায়তা করে ঠিক তেমন শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি শীতের মধ্যে আমাদের হালকা ঝাল যুক্ত খাবার গ্রহণ করা উচিত। কেননা ঝাল মরিচ এবং আদা রসুন দিয়ে রান্না করা খাবার আমাদের শরীরের রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে সাহায্য করে।
শীতকালে বিভিন্ন রকমের বাদাম যেমন কাঠবাদাম কাজুবাদাম আখরোট ইত্যাদি বাদামগুলো খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। কেননা এগুলো ফ্যাট জাতীয় খাবার হওয়ার ফলে শীতকালে আমাদের শরীরে শক্তির যোগান দেয়। সাথে খেজুরের গুড় খেতে পারেন যেটা আমাদের শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য পুদিনা চা খেতে পারেন। শীতের মধ্যে ছোট ছোট খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে আপনার শরীরে কখনো কোন রকমের দুর্বলতা আসবেনা।
শীতে যেভাবে শরীরের যত্ন নিবেন
শীতকালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর উপায়
শীতকালে নিজেকে ফিট রাখার কিছু সহজ টিপস এর মধ্যে একটি হলো আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিভাবে বজায় রাখবেন। কেননা শীতকালে যদি আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় তাহলে খেয়াল করে দেখবেন জ্বর, সর্দি থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকমের সংক্রামন রোগ আপনাকে আক্রমণ করেছে। তাই এই সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য আপনার শরীরের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। তাহলে চলুন শীতকালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিভাবে বাড়ানো যায় সে সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেই।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলাঃ শীতকালে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল যেমন কমলালেবু, মালটা, আমলকি ইত্যাদি ফলগুলো আপনার ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে।
শীতকালের শাকসবজি গ্রহণঃ শাকসবজি বলতে পালং শাক, বাঁধাকপি, গাজর, মেথি শাক ইত্যাদি অত্যন্ত ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ শাকসবজি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারঃ শীতকালীন প্রোটিনযুক্ত খাবারের মধ্যে ডিম, মাছ, মুরগীর মাংস, ডাল ইত্যাদি অন্যদিকে বিভিন্ন রকমের বাদাম আপনার রোগ প্রতিরোধ শক্তি যেমন বাড়ায় ঠিক তেমনভাবে আপনার শরীরের শক্তিও বৃদ্ধি করে। শীতকালে মধু খাওয়া উচিত। কেননা এটি ঠাণ্ডা ও সর্দি প্রতিরোধ করে।
শীতকালে শরীর উষ্ণ রাখার টেকনিক
শীতের মৌসুমের ঠান্ডা পরিবেশ বিভিন্নভাবে আমাদের শরীরকে ক্লান্ত ও দুর্বল করে দিতে পারে। সেজন্য শীতকালে শরীর কিভাবে উষ্ণ রাখা যায় সে সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। কেননা শীতের মৌসুমে আমরা যদি আমাদের শরীরকে উষ্ণ রাখতে না পারি তবে আমাদের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই শীতকালে নিজেকে ফিট রাখার কিছু সহজ টিপস এর মধ্যে নিজেকে উষ্ণ রাখার কিছু কার্যকরী উপায় এবং পয়েন্ট নিচে তুলে ধরা হলো।
স্তরে স্তরে পোশাক পরাঃ শীতকালে আমাদের শরীরে উষ্ণতা ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায় হল স্তরে স্তরে সঠিক পোশাক পরিধান করা। বিশেষ করে ভেতরে টি-শার্ট অথবা শার্ট তারপরে উলের সোয়েটার এবং সবশেষে জ্যাকেট পড়া উচিত। কেননা এগুলো আপনার শরীরকে উষ্ণ রাখতে বিশেষ জরুরী। উল কিংবা থার্মাল কাপড় শরীরে তাপমাত্রা ধরে রাখার জন্য বিশেষ কার্যকরী। তাই আপনি আপনার শরীরকে উষ্ণ রাখতে চাইলে এগুলো ব্যবহার করতে পারেন। হাত এবং পা উষ্ণ রাখার জন্য গ্লাবস অথবা মোজা ব্যবহার করুন।
গরম পানীয় পান করাঃ আমরা অনেকেই আছি যারা শীতকালে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি বা পানীয় খেতে চায় না। কিন্তু শীতের মধ্যে গরম পানীয় পান করা সবচেয়ে বেশি জরুরি। কেননা গরম পানীয় আপনার শরীরের তাপমাত্রা বাড়াতে বিশেষ কার্যকরী। গরম পানি আর মধ্যে আপনি আদা চা অথবা মসলা চা খেতে পারেন। কেননা এটি আপনার শরীরকে উসম রাখার পাশাপাশি আপনার শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও আপনি গরম দুধ অথবা হলুদ দুধ খেতে পারেন যা আপনার শরীরের ক্যালসিয়াম ও প্রাকৃতিক একটি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ করে।
এছাড়াও শীতকালে আপনার ঘরকে গরম রাখার ব্যবস্থা করুন। প্রয়োজনে গরম কম্বল অথবা হিটারের ব্যবস্থা করতে পারেন। ঘরের মধ্যে বাতাস চলাচল বন্ধ করার জন্য জানালার ফাঁক ফোঁকার বন্ধ করে দিন এবং ঘরের তাপমাত্রা ধরে রাখুন। প্রয়োজনে বিছানায় হট ওয়াটার ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার বিছানা উষ্ণ থাকবে পাশাপাশি আপনার শরীরও ঠিক থাকবে।
শীতকালে মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া
শীতকালীন ঠান্ডা আবহাওয়া আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলতে পারে। সেজন্য আগে থেকে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত। বিশেষ করে শীতের ঠান্ডা আবহাওয়া, দিনের কম আলো এবং সামাজিক যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে অনেক সময় আমাদের মধ্যে এক প্রকার বিষন্নতা কাজ করে। আবার এটি আমাদের জন্য অলসতারও কারণ হতে পারে। তাই আমাদের এমন কিছু অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত যেগুলো আমাদের মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
তো চলুন আর বেশি দেরি না করে আমরা জেনে নিই শীতকালে নিজেকে ঠিক রাখার কিছু সহজ টিপস এর মধ্যে কিভাবে আমরা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে পারি।
- আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে সূর্যের আলো গ্রহণ করতে হবে। কেরালা শীতের দিনে আপনি যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে সূর্যের আলো গ্রহণ না করেন তাহলে আপনার মস্তিষ্কে সেরোটোনিন হরমোনের উৎপাদন কমে যেতে পারে, যা আপনার বিষন্নতার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
- নিয়মিত শরীর চর্চা করুন, কেননা এটি আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। বাড়ির বাহিরে যদি শীতের তাপমাত্রা বেশি হয় তাহলে ঘরোয়া শরীরচর্চার বিকল্প পদ্ধতি বেছে নিন।
- শীতকালে ঠান্ডার বাহানা দিয়ে অলসতা করে কখনো ঘরবন্দী হয়ে থাকবেন না। এতে করে আপনি সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। যেটা আপনার বিষন্নতার কারণ হতে পারে। তাই পরিবার অথবা বন্ধু-বান্ধবদের সাথে সুমধুর সম্পর্ক বজায় রাখুন।
- প্রতিদিন ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে মেডিটেশন অথবা ধ্যান করতে পারেন। কেননা এই শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম শীতকালে আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- শীতের মধ্যে প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানোর জন্য সময় বের করুন। সাথে উষ্ণ বিছানা ব্যবহার করবেন যাতে আপনার একটা আরামদায়ক ঘুম হয়।
- বিভিন্ন রকমের সৃজনশীল কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। প্রয়োজনে নতুন কিছু শিখতে পারেন। যেমন পেইন্টিং করা, ফুলের বাগানের পরিচর্যা করা অথবা রান্নাবান্না শিখতে পারেন। এতে আপনার মানসিক অবস্থা সুন্দর থাকবে।
শীতকালীন রোগ এড়িয়ে যাওয়ার উপায়
আরো পড়ুনঃ অ্যালোভেরা খাওয়ার ফলে যে ১০ টি উপকার পাবেন
শীতকালে ঠান্ডা ও ফ্লু এড়াতে বারবার হাত ধোঁওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এখন আপনার মনে এই ভাবনাটা আসতে পারে যে, ঠান্ডার মধ্যে বারবার হাত ধোয়ার ফলে কিভাবে ঠান্ডা বা ফ্লু এড়ানো সম্ভব? কি তাইতো? হ্যাঁ শীতকালে বারবার হাত ধোঁওয়ার ফলে আপনার ঠান্ডা বা ফ্লু সম্ভব। চলুন উত্তরটা আমরাই দিয়ে দিচ্ছি। শীতকালে আপনি যদি ঠান্ডা ও ফ্লু এড়াতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে হাত ধোঁওয়াটা অভ্যাসে পরিণত করতে হবে।
আপনি একটা বিষয় খেয়াল করে দেখবেন যে, খাবার আগেও পরে, হাঁচি বা কাশি দেওয়ার পরে, টয়লেট ব্যবহার করার পর, বাইরে থেকে বাসায় আসার পরে এবং মোবাইল, কম্পিউটার ব্যবহারের পর আমাদের হাত ধোয়ার প্রয়োজন পড়ে। সেক্ষেত্রে আপনি যদি এটাকে অভ্যাসে পরিণত করতে পারেন তাহলে ফ্লু এবং ঠান্ডা লাগা আপনার জন্য এড়ানো সম্ভব হবে।
শীতকালে আদা, তুলসীপাতা, লেবু দিয়ে তৈরি চা খাওয়ার অভ্যাস করুন। কারণ এটি আপনার কাশির বিরুদ্ধে অনেক বেশি কার্যকারী। পাশাপাশি গরম স্যুপ খেতে পারেন। যেইটা আপনার শরীর উষ্ণ রাখে পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শীতকালে আপনার প্রয়োজন মনে করে ফ্লু ভ্যাকসিন নিতে পারেন। এতে করে আপনার নিরাপত্তা আরো বেশি বেড়ে যাবে। তাই শীতকালে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক ব্যায়াম ও পরিচ্ছনতা মেনে চলুন। তাহলে আপনার শীতকাল অনেক বেশি আনন্দদায়ক হয়ে উঠবে।
আমাদের শেষ কিছু কথা
শীতকালে কিভাবে নিজেকে ফিট রাখা যায়? এ বিষয়ে সমস্ত কিছু আমরা ইতোমধ্যে এই আর্টিকেলের মধ্যে আলোচনা করেছি। সেজন্য আপনি যদি শীতকালে নিজেকে সার্বিক দিক থেকে ফিট রাখতে চান তবে আমি যতগুলো বিষয় আপনার সাথে শেয়ার করেছি সেগুলো মেনে চলার চেষ্টা করবেন। কেননা শীতের ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যে নিজেকে সুস্থ রাখা এবং সবদিক থেকে পারফেক্ট থাকা একটু কষ্টকর হয়ে যায়। তাই আমার উপরোক্ত টিপস গুলো আপনার জেনে থাকা অতীব জরুরী।
এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অন্তর থেকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি যদি নিয়মিত এই ধরনের উপকারী টিপস পেতে চান তবে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। কেননা আমাদের এই ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকে। সবশেষে সকলের সুস্থতা কামনা করছি।
হ্যাপিনেস ভ্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url